কুমিল্লার গোমতি-তিতাস নদীতে লঞ্চে মাইক লাগিয়ে চলছিল ডিজে পার্টি। লঞ্চের ছাদের উপর নাচানাচি করছিলেন একদল তরুণ। এই সময় নদীর ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যান কয়েকজন। এতে প্রায় ১৫ জন দগ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সোমবার (২৩ আগস্ট) রাত ১০টায় কুমিল্লার গোমতী নদীতে মেসার্স বাদল সরকার অ্যান্ড সন্স নামের লঞ্চে এই ঘটনা ঘটে।
আহত এক কিশোর পানিতে পড়ে ডুবে যায়।মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সকালে ডুবে যাওয়া কিশোর শামীমের (১৪) লাশ দড়িকান্দি ব্রীজে পাশে ভেসে আসলে এলাকার লোকজন উদ্ধার করে।নিহত শামীম আহমেদ তিতাস উপজেলার শিবপুর গ্রামের সিএনজি চালক আবদুল মতিনের ছেলে। সে স্থানীয় একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
আহতদের মধ্যে সাতজনকে প্রাথমিকভাবে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে তিনজনকে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। আশঙ্কাজনক ৪ জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তিতাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাম্মদ রাশেদা আক্তার ও তিতাস থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুধীন চন্দ্র দাস এবং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ আহমেদ ফকির উপস্থিত হয়ে বিষয়টি তদন্ত ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্র জানা যায়, উপজেলার শিবপুর গ্রামের ২০/২৫জনের একদল কিশোর লঞ্চে ডিজ পার্টি করার জন্য সোমবার বিকেলে আনন্দ ভ্রমণে বের হয়। খাওয়া দাওয়া শেষ করে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে লঞ্চের ছাদের উপর ডেকসেট বাজিয়ে গানের তালে তালে নাচানাচি করার সময় চালকের অসাবধানতায় দড়িকান্দি ব্রীজের নিকট বিদ্যুতের সাথে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১৪/১৫ জন আহত হয়। একজন কিশোর পানিতে পড়ে ডুবে যায়। রাতে তাদেরকে গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর অবঃ মোহাম্মদ আলী সুমন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল ইসলাম খান আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে তিতাস থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন মিয়া জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় তিতাস নদীতে লঞ্চের ছাদে নাচানাচির এক পর্যায়ে বিদ্যুতের তারের সঙ্গে জড়িয়ে প্রায় ১৫ জন দগ্ধ হয়। এ সময় পানিতে পড়ে নিখোঁজ হয় শামীম হোসেন। তার মরদেহ ভোরে ভেসে উঠেছে। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত হয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে সে। বিস্তারিত পরে জানা যাবে।
দাউদকান্দি সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো জুয়েল রানা বলেন, নদীতে কিছু দিন যাবৎ লঞ্চে ডিজে পাটির নামে বখাটে কিশোরদের উচ্ছৃঙ্খলার বিরুদ্ধ সতর্ক করা হয়েছে। তাদের বাবা মা ও সমাজের নেতৃস্থানীয় লোকজন সচেতন হলেই এদেরকে রোধ করা সম্ভব।