মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় তারকা পরীমনিকে তৃতীয় দফার রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করার পর কারাগারে পাঠানোর আদেশ হয়েছে।শনিবার (২১ আগস্ট) বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে শুনানির পর পরীমনি তার আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভি ও কামরুজ্জামান চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘আপনারা জামিন চান না কেন? আমি তো পাগল হয়ে যাবো। আপনারা বুঝতেছেন, আমার কী কষ্ট হচ্ছে?’
শুনানি শেষে পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘পরীমনিকে দফায় দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমরা বারবার বলছি, পরীমনি অসুস্থ। শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত পরীমনি আমাকে বলেছেন, তিনি পাগল হয়ে যাবেন।’
এর আগে, দুপুরে পরীমনির আইনজীবীরা আদালতকে জানান, তাদেরকে পরীমনির সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না।মামলার ব্যাপারে আলোচনা করার সুযোগ চেয়ে তারা আদালতে বলেন, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের আইনগত অধিকার রয়েছে।
তারা আরও বলেন, লাইফ স্টাইলে পরিবর্তন আসার কারণে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ্ হয়ে পড়েছেন।রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু আদালতে বলেন, আসামির সঙ্গে দেখা করার ব্যাপারে তাদের আপত্তি রয়েছে।পাশাপাশি, তার সঙ্গে ট্রায়াল স্টেজে কথা বলার পরামর্শ দেয় রাষ্ট্রপক্ষ।
মাদক মামলায় গ্রেপ্তার চিত্রনায়িকা পরীমনিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (সিএমএম) আজ শনিবার এই আদেশ দেন। একটি প্রিজন ভ্যানে করে বেলা ৩টা ১৪ মিনিটে তাঁকে আদালতের হাজতখানা থেকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে এক দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁকে আজ শনিবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে আদালতে হাজির করা হয়।
পরীমনির আইনজীবীরা বলেন, পরীমনির সঙ্গে তার নানাকে কথা বলতে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার বিষয়ে আপত্তি রয়েছে।এ সময় বিচারক আসামিপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, তারা কী কথা বলতে চান?
পরীমনির আইনজীবীরা জানান, তারা আইনগত বিষয় নিয়েই কথা বলতে চান। প্রয়োজনে সিএমএম হাজতখানায় কথা বলার সুযোগ করে দেওয়া হোক।বিচারক নথি পর্যালোচনা করে আদেশ দেওয়ার কথা জানিয়ে আসনত্যাগ করার পর পরীমনি তার আইনজীবীদের উদ্দেশে করে বলেন, তার সঙ্গে কথা বলার দরকার কী? জামিন কেন চাওয়া হচ্ছে না?
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট রাতে ৪ ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরীমনি ও তাঁর সহযোগীকে আটক করে র্যাব। তাঁর বাসা থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয় বলে জানানো হয়। আটকের পর তাঁদের নেওয়া হয় র্যাব সদর দপ্তরে। পরে র্যাব-১ বাদী হয়ে মাদক আইনে পরীমনির বিরুদ্ধে মামলা করে।