অপরাধগাজীপুর

কারাগারে কেমন আছেন সেই মিন্নি?

বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী থেকে এখন হত্যার মূল পরীকল্পনাকারী আসামি। প্রথমে মিন্নিকে দোষী সাব্যস্ত করা না হলেও পরবর্তীতে রিফাত হত্যায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তার। ওই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী সে।এদিকে এই মামলার প্রধান আসামি মো. সাব্বির আহম্মেদ নয়ন ওরফে নয়নবন্ড ২০২০ সালের ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়।

২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত মিন্নিসহ ৬ জনকে ফাঁসির আদেশ দেন। ফাঁসির আদেশ হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর বরগুনা জেলা কারাগার থেকে মিন্নিকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। মিন্নি এই কারাগারের কনডেম সেলে আছেন। মিন্নির মৃত্যুদণ্ডের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। তবে করেনাভাইরাসের কারণে হাইকোর্ট বন্ধ থাকায় এতদিন আপিল শুনানি করা হয়নি। এখন কোর্ট খোলায় দ্রুত সময়ের মধ্যে এই আপিল শুনানি নিস্পত্তি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, কারাগারের কনডেম সেলে সুস্থ আছেন মিন্নি। কারাবিধি অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাধারণত কনডেম সেলে রাখা হয়। ওই সেলে সাধারণ একজন আসামি থাকার কথা। তবে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে অতিরিক্ত আসামি থাকার কারণে একটি কনডেম সেলে তিনজন কয়েদিকে থাকতে হচ্ছে।

কারাগারের একটি সূত্র বলছে, করোনার কারণে কারাগারে হাজতি ও কয়েদির সঙ্গে দেখা-স্বাক্ষাত করা একেবারেই নিষেধ। তবে প্রতি সপ্তাহে পরিবারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ পেয়ে থাকেন হাজতি বা কয়েদিরা। মিন্নিও সেই সুযোগটা নিয়ে থাকেন। পরিবারের সঙ্গে দেখা-স্বাক্ষাত না হলেও প্রতি সপ্তাহে টেলিফোনে কথা বলে থাকেন।

মিন্নিকে বারবার নির্দোষ দাবি করে আসা তার বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন কিশোর জানান, মিন্নির জন্য পরিবারের সবাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। মেয়ের জন্য চিন্তা করতে করতে মিন্নির মা নানা রোগে আক্রান্ত।

কারাগারে মিন্নির শারীরিক অবস্থা ভালো নেই দাবি করে বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, ‘মিন্নির বুকে ব্যথা ও মাথা ব্যথাসহ অন্যান্য অনেক উপসর্গ আছে। মিন্নি খেতে পারে না, ঘুমাতে পারে না। সব সময় অসুস্থ থাকে। তাই খুবই দুর্বল হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার কারণে তাকে চেনাই এখন দুষ্কর।’

রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মিন্নি ছাড়া বাকি যে পাঁচ আসামিকে আদালত ফাঁসির আদেশ দেন তারা হলো- রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, মো. রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় ও মো. হাসান। খালাস পেয়েছেন মো. মুসা, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর ও কামরুল হাসান সাইমুন নামে চারজন।

২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর রিফাত হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে মিন্নির আপিল আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাইকোর্ট। আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিচারিক আদালতে মিন্নিকে দেওয়া অর্থদণ্ড স্থগিতের আদেশ দেয়। ভিডিও কনফারেন্সে মিন্নির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।

Back to top button