আফগানিস্থানে নাটকীয় মোড় ,নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করলেন সালেহ, তার স্বপ্ন নতুন যুদ্ধের।তবে কি একেবারে মসৃণ হবে না আফগানিস্তানের ক্ষমতা বদল? নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে তালিবানদের বিরুদ্ধে নতুন লড়াইয়ের ডাক দিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহ।
আফগানিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ নিজেকে দেশের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) টুইট করে একথা জানিয়েছেন তিনি।টুইটে তিনি লিখেছেন, আফগানিস্তানের সংবিধান অনুসারে প্রেসিডেন্টের অনুপস্থিতিতে বা প্রেসিডেন্ট পালিয়ে গেলে বা পদত্যাগ করলে বা তার মৃত্যু হলে প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্টই তত্ত্বাবধায়ক প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আমি বর্তমানে দেশের ভেতরে আছি এবং আমি বৈধ তত্ত্বাবধায়ক প্রেসিডেন্ট।
আফগান সংকটে দেখা দিল নতুন মোড়। সেই দেশের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহ এদিন দাবি করেছেন, পদত্যাগ করে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ছেড়ে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আশরাফ ঘানি পালানোর পর এখন তিনিই দেশের তত্ত্বাবধায়ক রাষ্ট্রপতি বা কেয়ারটেকার প্রেসিডেন্ট। আফগানিস্তানের সংবিধান উদ্ধৃত করে তিনি এদিন এই দাবি করেছেন। অবশ্য তার আগেই তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে তালিবানদের কাছে আত্মসমর্পন তিনি করবেন না। কাবুলের পতনের পরও তালিবানদের বিরুদ্ধে নতুন লড়াই শুরুর অঙ্গিকার করেছেন তিনি।
এর আগে আশরাফ ঘানির পদত্যাগের পর তালিবানদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল। এমন কি ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলাকালীন দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসাবে প্রাক্তন আফগানিস্তান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি আহমদ জালালির নামও বেছে নেওয়া হয়েছিল। শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য, কাতারের রাজধানী দোহায় দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনাও শুরু হয়েছে। তারই মধ্যে খেলা ঘুরিয়ে দেওয়ার ডাক দিলেন সালেহ।
গত ১৫ অগাস্ট আফগানিস্তানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফ জানিয়েছিলেন সরকারের পতন হলেও তিনি আত্মসমর্পণ করবেন না। টুইট করে বলেছিলেন, যে জনগণ তাঁর উপর ভরসা করেছিলেন, তাদের তিনি নিরাশ করবেন না। তালিবানদের সঙ্গে এক ছাদের তলায় তিনি থাকতে পারবেন না। এর পরদিনই অর্থাৎ, ১৬ অগাস্ট আফগান প্রথম উপরাষ্ট্রপতির একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়, যেখানে তাঁকে হিন্দু কুশ পর্বতের এক পার্বত্য উপত্যকায় দেখা গিয়েছিল। সঙ্গে ছিলেন, তাঁর প্রাক্তন মেন্টর তথা খ্যাতিনামা তালিবান বিরোধী যোদ্ধা আহমদ শাহ মাসুদের পুত্র। তিনি পাঞ্জশিরে এক মিলিশিয়া বাহিনীর প্রধান। সেখানেই তালিবানদের মোকাবিলার জন্য নতুন করে তালিবান বিরোধী যোদ্ধাদের জড়ো করছেন আমিরুল্লাহ, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, আমরুল্লাহ সালেহ যখন নিজেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দেন তার ঠিক কিছুক্ষণ আগে তালেবানের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও উপনেতা মোল্লা আব্দুল গনি বারাদার কাতার থেকে আফগানিস্তানের কান্দাহারে পৌঁছেছেন।মোল্লা বারাদার তালেবান সরকারের প্রধান হিসেবে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিচ্ছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
তালেবানের এক মুখপাত্র টুইটবার্তায় বলেন, ‘বারাদার ও তালেবানের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল কাতার থেকে আজ দুপুরে প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমিতে পৌঁছান।’রোববার রাজধানী কাবুল দখলের মাধ্যমে দীর্ঘ ২০ বছর পর আফগানিস্তানের পুরো নিয়ন্ত্রণ হাতে আসে তালেবানের। তালেবানের ভয়ে আফগানিস্তান ছাড়ছে হাজার হাজার আফগান। অন্য দেশে আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে সোম ও মঙ্গলবার কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় করে শত শত মানুষ।