ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে মামলা
অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারণা চলছেই।বিপুল টাকার অর্ডার নিয়ে এবার উধাও ই-অরেঞ্জ।দেশে ই-কমার্স প্রতারণার নতুন নাম ই-অরেঞ্জ ডটকম। গ্রাহকদের দাবি, প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ২০০ কোটি টাকার পণ্যের অর্ডার নিয়ে ডেলিভারি দিচ্ছে না। অর্ডার নিয়ে পণ্য না দেওয়ার টালবাহানার মধ্যেই মালিকানা পরিবর্তন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন মালিকও লাপাত্তা। ই-অরেঞ্জের গুলশান কার্যালয়ের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বন্ধ কার্যালয়ের সামনে প্রায় প্রতিদিনই জড়ো হচ্ছেন এর গ্রাহকরা।
ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ই-অরেঞ্জের মালিক ও কর্মীদের বিরুদ্ধে পণ্য সরবরাহ না করে প্রায় এক হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছেন গ্রাহকরা।আজ মঙ্গলবার গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান, ঢাকার আজমপুরের বাসিন্দা মো. আবু তাহের গত রাতে ৩৭ জন গ্রাহকের পক্ষে ই-অরেঞ্জের মালিক ও কর্মীদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন।মামলায় পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তারা হলেন- মাসুকুর রহমানের স্ত্রী সোনিয়া মেহজাবিন, আমানউল্লাহ, বীথি আক্তার, কাউসার ও ই-অরেঞ্জের অন্য সব মালিক।
গুলশান থানায় মঙ্গলবার সকালে মামলা দায়েরের পর বিকালে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান।তাদের পক্ষে জামিন শুনানি করেন ঢাকা বারের সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী।ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আবুবকর ছিদ্দিক শুনানি নিয়ে দুইজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার মো. জাফর আহেমদ।
এদিকে ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান ই–অরেঞ্জকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আজ মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল থেকে এ নোটিশ দেওয়া হয়। এতে সাত দিন সময় দিয়ে ই–অরেঞ্জকে সম্পদের হিসাব দিতে বলা হয়েছে।বলা হয়েছে, গত ৩১ জুলাই পর্যন্ত সম্পদ, দায় ও চলতি মূলধনের পরিমাণ কত, তা জানাতে হবে। সরবরাহকারীদের কাছে বকেয়া থাকলে তার পরিমাণ কত, তা–ও জানাতে হবে।
এর আগে গতকাল বিকেলে ই-অরেঞ্জের গুলশান কার্যালয়ের সামনে প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকরা বিক্ষোভ এবং সড়ক অবরোধ করেন। এরপর তারা প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা বাসার সামনে যান। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন মাশরাফি।
মাশরাফি গ্রাহকদের বলেন, গেল জুলাইয়ের ১ তারিখে তার চুক্তি শেষ হয়েছে। তবে গ্রাহকদের টাকা ও পণ্য ফেরতে তিনি সব ধরনের সহায়তা করবেন।এসময় মাশরাফি গ্রাহকদের সামনে ই-অরেঞ্জের শীর্ষ কর্মকর্তাকে ফোন দেন। এ সময় শীর্ষ সেই কর্মকর্তা ১৯ আগস্ট টাকা দেয়া অথবা পণ্য ফেরত দেয়ার কার্যক্রম শুরুর কথা বলেন।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ই–অরেঞ্জের ভুক্তভোগী বাইক ও ভাউচারের ক্রেতারা র্যালি ও মানববন্ধন করেন। প্রতিষ্ঠানটির মালিকপক্ষের বিদেশযাত্রা স্থগিত এবং ভুক্তভোগীদের পণ্য বা সমপরিমাণ টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাঁরা।