কাবুলে উড়ন্ত বিমান থেকে পড়লো ৩ জন।আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল তালেবানের দখলে যাওয়ার পর থেকেই দেশ ছাড়ার হিড়িক পড়ে গেছে। তাই একমাত্র মাধ্যম বিমানবন্দরেই ভিড় করছেন আফগানরা। মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছেন বিমানে ওঠার। ফলে তুমুল হুড়োহুড়ির একপর্যায়ে সেখানে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে। এতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত পাঁচজনের।
মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, তালেবানরা কাবুলে পৌঁছানোর পর থেকে কাবুল বিমানবন্দরের দিকে দিগ্বিদিক ছুটছে মানুষ। সেখানে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। বিমানবন্দরের কর্মীরাও সেখান থেকে পালিয়ে গেছেন। সোমবার বিমানবন্দরের প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে গুলিতে অন্তত তিন জন নিহত হয়েছেন। অন্তত পাঁচ জনের রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এদিকে একটি বিমান থেকে তিন জনের খসে পড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানবন্দরের টারমাকে দাঁড়িয়ে আছে একটি সামরিক পরিবহন বিমান। সেটিতে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি করছেন শত শত মানুষ। যে যেভাবে পারছেন বিমানে ওঠার চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে বিমানটি ছেড়ে যায়। এসময় বিমানের সাথে সাথে অনেককে দৌড়াতেও দেখা যায়। এভাবে চলার পর বিমানটি রানওয়ে ছেড়ে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যে বিমানটি থেকে অন্তত তিন জনকে মাটিতে পড়তে দেখা যায়।
তবে এর মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে চলন্ত বিমান থেকে নিচে পড়ে। কেউ কেউ বলছেন, বিমানের চাকা ধরে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তারা। কিন্তু বিমানটি উড্ডয়নের পর মাঝ আকাশ থেকে পড়ে তাদের মৃত্যু হয়।
কে আগে উঠবেন, তা নিয়ে ধাক্কাধাক্কিতেও একাধিক মৃত্যু হয়েছে। বিমানের রেলিংয়ে ঝুলেই দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছেন অনেকে। কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দর এখন লোকে লোকারণ্য। এখনও অসংখ্য মানুষ সেখানে বিমানের আশায় ছুটে বেড়াচ্ছেন। তবে বিদেশি নাগরিক ও কূটনীতিকরাই বিমানে উঠছেন বেশি। সাধারণ আফগানদের মধ্যে এ নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়ছে। কাবুল থেকে কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ সব পশ্চিমা দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সোমবার সকালের দিকে ভিড় সরাতে মার্কিন সেনারা আকাশে ফাঁকা গুলি ছুড়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। রয়টার্স বলছে, হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
এদিকে, একজন প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তিনি পাঁচ জনের মৃতদেহ একটি গাড়িতে করে নিয়ে যেতে দেখেছেন। আরেকজন বলেছেন, হতাহতরা গুলিতে নাকি ভিড়ে পদদলিত হয়ে মারা গেছেন, তা নিশ্চিত নয়। যুক্তরাষ্ট্র ও সহযোগী দেশগুলোর কূটনীতিক ও কর্মীদের সরিয়ে নিতে কাবুল বিমানবন্দরের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন মার্কিন সৈন্যরা। তারা এয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাও নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেছেন। এর মধ্যে সোমবার মার্কিন সেনাদের গুলি ও হতাহতের খবর পাওয়া গেল।
এদিকে, কাবুল থেকে কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ সব পশ্চিমা দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সোমবার সকালের দিকে ভিড় সরাতে মার্কিন সেনারা আকাশে ফাঁকা গুলি ছুড়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লাইটগুলোতে দূতাবাস কর্মী ও অন্য আমেরিকানদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। আর এতে করে অন্যদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে যেসব আফগান বিদেশিদের হয়ে কাজ করেছেন। এর ফলে সেখানে আরও বিশৃঙ্খলা এবং বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।