সারাদেশে যুবলীগের অক্সিজেন বিতরণ
করোনাকালে দেশের বিভিন্ন জেলায় অক্সিজেন ব্যাংক তৈরি করে বিনা মূল্যে সেবা দিচ্ছেন যুবলীগের সদস্যরা। এ কাজ অব্যাহত রাখতে এবার কয়েকটি জেলার অক্সিজেন ব্যাংকের কাছে অক্সিজেন সিলিন্ডার তুলে দিয়েছে কেন্দ্রীয় যুবলীগ। একই সঙ্গে রাজধানী ঢাকার কয়েকটি হাসপাতালের প্রতিনিধির কাছেও বিনা মূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার বিতরণ করা হয়েছে।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মহামারীকালে যুবলীগের উদ্যোগে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার হাসপাতালে অক্সিজেন পাঠানো হয়েছে।সোমবার আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এই অক্সিজেন সিলিন্ডার বিতরণ অনুষ্ঠান হয়।
এতে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ‘কর্মের মাধ্যমে মানুষ তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছায়। আপনারা মানুষের জন্য কাজ করে যান, আপনারাও সফল হবেন।’ যুবলীগকে অক্সিজেন দিয়ে পাশে থাকার জন্য আবুল খায়ের গ্রুপ ও নাভানা গ্রুপের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা শিশু হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মাজেদা হাসপাতাল অক্সিজেন ব্যাংক, শেখ ফজলুল হক মণি ও আরজু মণি অক্সিজেন ব্যাংক (যশোর)কে ১২০ কেজি ওজনের ১০টি করে সিলিন্ডার দেওয়া হয়েছে।
ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘একদিন আমার মায়ের সঙ্গে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে গেলে তাঁদের মুরগি এবং মুরগির বাচ্চা আমার খুব পছন্দ হয়ে যায়। সেটি বঙ্গমাতা টের পেয়েছিলেন। কিন্তু মায়ের কারণে বাসায় আনতে পারিনি। কাঁদতে কাঁদতে সেদিন বাসায় ফিরেছিলাম। কিছুক্ষণ পরে দেখি, মুরগি ও মুরগির বাচ্চা আমার বাসায় পৌঁছে দিয়েছেন। এটাই ছিল শিশুদের প্রতি বঙ্গমাতার ভালোবাসা।’
গাজীপুর মহানগর যুবলীগ, পাবনা জেলা যুবলীগ, কুমিল্লা মহানগর যুবলীগ, খুলনা মহানগর যুবলীগ, মাগুরা জেলা যুবলীগ, লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগ, সিলেট মহানগর যুবলীগ, ময়মনসিংহ জেলা যুবলীগ, পটুয়াখালী জেলা যুবলীগ, কুড়িগ্রাম জেলা যুবলীগ, চাঁদপুর জেলা যুবলীগ ও শরীয়তপুর জেলা যুবলীগের অক্সিজেন ব্যাংকে ৩০ কেজি ওজনের ৫টি করে অক্সিজেন সিলিন্ডার দেওয়া হয়।
‘বিনা মূল্যে অক্সিজেন সেবা’ শিরোনামের এ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান। তিনি বলেন, যুবলীগের কর্মীরা অসহায় কৃষকের ধান কেটে দিয়েছেন, রেশনিং পদ্ধতিতে খাদ্যসহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন, পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ করছেন, করোনায় মৃতদের দাফন কর্মে অংশগ্রহণ করছেন, ফ্রি টেলিমেডিসিন ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এসব কিছুর ধারাবাহিকতায় আজকের এই বিনা মূল্যে অক্সিজেন সেবা কার্যক্রম।
যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে সংগঠনের সভাপতি শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, “আপনারা এই করোনার মহামারীতে নানাভাবে মানুষের পাশে রয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করেন বলেই এতটা কষ্ট, এতটা ত্যাগ স্বীকার করে মানুষের সেবা করে চলেছেন।
“মনে রাখবেন শুধু মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করলেই মানুষ হওয়া যায় না। কর্মের মাধ্যমে মানুষ তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছায়। আপনারা মানুষের জন্য কাজ করে যান-আপনারাও সফলকাম হবেন।” বঙ্গমাতাকে স্মরণ করে শেখ ফজলে শামস্ বলেন, “বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন স্বশিক্ষায় শিক্ষিত। তার হৃদয় ছিল মহানুভবতায় ভরপুর, কিভাবে দুঃসময়ে মাথা ঠাণ্ডা রেখে এগিয়ে যেতে হয়, তা বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জীবন থেকে আমরা শিখতে পারি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মামুনুর রশীদ, খালেদ শওকত আলী, সাজ্জাদ হায়দার লিটন, মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মতিউর রহমান, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী প্রমুখ।