পুলিশের এক নারী পরিদর্শককে ধর্ষণ করার অভিযোগে পুলিশ সুপার (এসপি) মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার জন্য উত্তরা-পূর্ব থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মোক্তার হোসেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) কর্মরত।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এ আদেশ দেন। এর আগে আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে, নথি পর্যালোচনায় আদেশের জন্য রেখেছিলেন।
পিপি আফরোজা বলেন, বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে এসপি মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার আবেদন করেন পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তা। আদালত বাদীর জবানবন্দি, অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে ওই নারীর অভিযোগে এজাহার হিসেবে নেওয়ার জন্য উত্তরা-পূর্ব মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন খান।
নারী পুলিশ কর্মকর্তা ঢাকার সপ্তম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এসপি মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা নেওয়ার আবেদন করেন। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, পুলিশ সুপার মোক্তার হোসেন ২০১৯ সালের মে মাসে সুদানে জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের কন্টিনজেন্টের কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত হন। বাদী আগে থেকেই সেখানে কর্মরত থাকায় মিশন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকায় বিভিন্ন অজুহাতে সহযোগিতার নামে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। সেখানে তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর দুপুরে আসামি বাদীর বাসায় গিয়ে তার ব্যবহৃত গাড়ির চাবি চান। বাদী চাবি ইউনিফর্মের পকেট থেকে আনতে গেলে আসামি পেছন থেকে তাকে জাপ্টে ধরে ধর্ষণ করেন। এরপর এ ঘটনা কাউকে না জানাতে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি হুমকি-ধামকি দেন। ২২ ডিসেম্বর ক্ষমা চেয়ে আবারও তাকে ধর্ষণ করেন।
২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি মৌখিকভাবে বিয়ে করে বাদীকে আবারও ধর্ষণ করেন। এরপরও আরও কয়েকদফা বাদী ধর্ষণ করেন মোক্তার হোসেন। নিকাহ রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে বাদীকে গ্রহণ করার তাগিদ দিলে মোক্তার হোসেন তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। বাদীকে এড়িয়ে যেতে থাকেন। এর অবস্থায় গত ২১ এপ্রিল বাদী মোক্তার হোসেনের রাজারবাগ বাসায় গিয়ে আশ্বান অনুযায়ী বিয়ের কাবিননামা সম্পন্ন করার তাগিদ দেয়। এতে মোক্তার হোসেন অস্বীকৃতি জানান।
মোক্তার হোসেন, তার স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে বাদীকে মারধর করেন এবং হুমকি ধামকি দেন। করোনার কারণে আদালত বন্ধ থাকায় মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে জানান বাদী। গত ১০ আগস্ট বাদী উত্তরাপূর্ব থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ না করে আদালতে মামলার করার জন্য বলেন। এজন্য আদালতে এসে মামলা দায়ের করলেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন বাদী।