বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা ইভ্যালির অফিসের সামনে অবস্থান নিয়েছে
বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা ইভ্যালির অফিসের সামনে অবস্থান নিয়েছে।সঠিক সময়ে পণ্য ডেলিভারি না পাওয়ায় বিতর্কিত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালির অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন গ্রাহকরা। তাদের অভিযোগ, অর্ডার করার ১৫৭ দিন পরও তারা তাদের বাইক পাননি। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অন্তত ৪০ জন গ্রাহক অংশ নিয়েছেন।
সোমবার বিকেলে প্রতিষ্ঠানটির সোবাহানবাগের ডেলিভারি পয়েন্ট ভবনের সামনে এ গ্রাহকের এ বিক্ষোভ দেখা গেছে। তাদের হাতে থাকা একটি ব্যানারে লেখা থাকতে দেখা যায়, ‘আমরা আমাদের বাইক চাই। ১৫৭ তম দিনেও আমরা আমাদের বাইক পাইনি।’বাইক ডেলিভারি পাওয়ার দাবিতে সোমবার বিকেলে প্রতিষ্ঠানটির সোবাহানবাগের ডেলিভারি পয়েন্ট ভবনের সামনে জড়ো হন প্রায় ৪০ জন গ্রাহক।
মহিউদ্দিন চৌধুরী শুভ নামে এক গ্রাহক চলতি বছরের মার্চে ইভ্যালির সাইক্লোন অফারে বাইকের জন্য টাকা পরিশোধ করেছেন। কিন্তু তিনি এখনো তার পণ্যটি বুঝে পাননি।তিনি বলেন, আমরা ইভ্যালির সিইওর জন্য বিকেল ৪টা থেকে অপেক্ষা করছি। তবে তার দেখা না পাওয়ায় রাত ৯টা থেকে এখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।
গত জুন মাসে ইভ্যালির আর্থিক অনিয়ম নিয়ে এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ১৪ মার্চ পর্যন্ত ইভ্যালি গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম ২১৪ কোটি টাকা নিয়েও পণ্য সরবরাহ করেনি। আবার মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালির দেনার পরিমাণ ১৯০ কোটি টাকা। অন্যদিকে ইভ্যালির চলতি সম্পদের মূল্য মাত্র ৬৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ইভ্যালির পুরো সম্পদ দিয়ে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের পাওনার মাত্র ১৬% পরিশোধ করা সম্ভব।
এসব তথ্য ইভ্যালিই বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সরবরাহ করেছে জানিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইভ্যালির প্রকৃত দায়-দেনার পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে। কারণ, ইভ্যালির দেওয়া এসব তথ্যের সঠিকতা যাচাই করতে কোম্পানিটির রেপ্লিকা ডাটাবেইজে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
এর প্রেক্ষিতে গত ১৫ জুলাই পর্যন্ত ইভ্যালি গ্রাহকদের কাছ থেকে কতো টাকা নিয়েছে, কতো টাকার পণ্য গ্রাহকদের ডেলিভারি করেছে, মার্চেন্টদের কতো টাকা পরিশোধ করেছে এবং গ্রাহক ও মার্চেন্টদের বকেয়া পরিশোধের পরিকল্পনা ১ আগস্টের মধ্যে জানাতে কোম্পানিটিকে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।গত ১ আগস্ট ইভ্যালি ফিরতি চিঠি দিয়ে এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য না দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ৬ মাস সময় চেয়েছে।
গত ২ আগস্ট ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল টিবিএসকে বলেছিলেন, আমরা এক্সটার্নাল অডিটর নিয়োগ দিয়ে কোম্পানির ভ্যালুয়েশনসহ দায়-দেনা নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছি। অডিটেড রিপোর্ট অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হবে। সেজন্য ৬ মাস সময় চেয়েছি।
এদিকে ইভ্যালির ভবিষ্যত নির্ধারণে ৯ সদস্যের আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষকে করে প্রধান করে গঠিত কমিটি আগামী ১১ আগস্ট বৈঠক করে ইভ্যালির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ধানমন্ডি জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে গিয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের দাবির বিষয়টি শুনেছেন।