আলিবাবার ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ।হোটেলরুমে এক নারীকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে চীনের প্রযুক্তি বিষয়ক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান আলিবাবা এক ম্যানেজারকে বরখাস্ত করবে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। তা দেখতে পেয়েছে অনলাইন বিবিসি। তাতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডানিয়েল ঝাং বলেছেন, দু’জন বস এ অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়ে পদত্যাগ করেছেন।
আলিবাবা এবং পুলিশ উভয়ই বর্তমানে ঘটনাটি তদন্ত করছে। কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড্যানিয়েল ঝ্যাং বলেছেন, “এটি একটি জঘন্য কাজ,”। আমাদের একজন মহিলা কর্মী মাতাল অবস্থায় যৌন হয়রানির শিকার হন। আমরা অভিযুক্তকে বরখাস্ত করেছি। ভবিষ্যতে, তিনি আর আলিবাবার সাথে যুক্ত হবেন না। তিনি ধর্ষণ করেছেন কি না তা খতিয়ে দেখবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ডানিয়েল ঝাং বলেছেন, অভিযুক্ত ম্যানেজার ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, যখন ওই নারী ‘মাতাল’ অবস্থায় ছিলেন, তখন তার সঙ্গে তিনি অন্তরঙ্গ সম্পর্কে মিলিত হয়েছেন।
ভুক্তভোগীর মতে, একজন সিনিয়র সহকর্মী তাকে ক্লায়েন্ট মিটিং নিয়ে কথা বলার জন্য আলিবাবার প্রধান কার্যালয় জিনান থেকে ৯০০ কিলোমিটার দূরে হাংঝোতে নিয়ে যান। তার অভিযোগ, রাতের খাবারের পর তাকে মদ খেতে বাধ্য করা হয়। পরদিন সকালে যখন তিনি ঘুম থেকে উঠলেন তখন তিনি নিজেকে নগ্ন দেখতে পেলেন এবং পুরো ব্যাপারটি বুঝতে পারলেন। হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে অভিযুক্ত ম্যানেজার মোট চারবার তার ঘরে ঢুকছে।
ডানিয়েল ঝাংয়ের আরো বলেছেন , অভিযুক্ত ওই ম্যানেজারকে বরখাস্ত করা হবে। তাকে আবার নতুন করে নিয়োগ দেয়া হবে না। তিনি ধর্ষণ করুন বা অনৈতিক কাজ করুন- যা-ই করুন না কেন, তাতে আইন লঙ্ঘন করেছে কিনা তা নির্ধারণ করবে আইন প্রয়োগকারীরা। চিঠিতে আরো বলা হয়, ওই নির্যাতিত নারীর মঙ্গলের দায়দায়িত্ব নেবে আলিবাবা। এতে বলা হয়, ‘আমরা যতদূর পারি তার দেখাশোনার সবকিছু করবো’।
পূর্বাঞ্চলীয় জিনান শহরে ওই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। রোববার সেখানকার পুলিশ বলেছে, তারা এরই মধ্যে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করছে। ধর্ষিত ওই নারীর ধর্ষণ সংক্রান্ত অভিযোগ প্রকাশ করা হয়েছে চীনে টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগ বিষয়ক ওয়েবসাইট উইবোতে। এতে দেখা যায়, ওই নারীর অভিযোগ মোট ১১ পৃষ্ঠার।
ভুক্তভোগী বিচার চাইতে আলিবাবার মানবসম্পদ বিভাগের (এইচআর) কাছে গিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি ন্যায়বিচার পাননি। তিনি অভিযোগ করেন, মানবসম্পদ বিভাগ তাৎক্ষণিক কোনো পদক্ষেপ নেয়নি এবং নারীদের অনেক ধরনের অপ্রত্যাশিত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে।আলিবাবা বলছে, ভুক্তভোগীকে সাহায্য করার জন্য যা যা করা দরকার তা করবে। সাম্প্রতিক ঘটনাটি চীনের সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় তুলেছে।