অপরাধকক্সবাজার

মুক্তিপণের দাবিতে ৫০ জেলেকে বঙ্গোপসাগরে অপহরণ

মুক্তিপণের দাবিতে ৫০ জেলেকে বঙ্গোপসাগরে অপহরণ।বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজারের উপকূল একাধিক ফিশিং ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসময় ট্রলারে থাকা সব মাছ ও মালামাল লুট করেছে জলদস্যুরা। লুট হওয়া ট্রলারে থাকা অর্ধশত জেলেকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

কুতুবদিয়া ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন কোম্পানি বলেন, শুক্রবার ফিরে আসা কয়েকজন জেলে জানিয়েছে গত ৫ দিনে জলদস্যুরা অন্তত ১২-১৫টি ট্রলারে হানা দিয়েছে। ভারী অস্ত্রের মুখে লুটপাট চালানোর পর এসব ট্রলারে থাকা ৫০ জনের বেশি জেলেকে পাঁচটি ট্রলারে আটকে রেখেছে। বাকিদের ছেড়ে দেয়। জলদস্যুরা আটকে রাখা ৫০ জেলের জন্য কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে।

বরগুনা জেলা ট্রলার মালিকরা জানান, রোববার রাতে বঙ্গোপসাগরের ফেয়ারওয়ে বয়া, পিিদয়া ও নারকেলবাড়িয়ায় জলদস্যুর সংঘবদ্ধ দল হানা দিয়ে আলম মোল্লা, মিজান ও ছগির কোম্পানির মো. ছগিরের মালিকানাধীন ৩ ট্রলার ৫০ মাঝিকে অপহরণ করেছে সংঘবদ্ধ জলদস্যুরা। জেলেদের মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ফিরে আসা জেলেরা তাদের কাছে এ তথ্য জানান।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি এরমধ্যে কোস্টগার্ডকে জানিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত কোন অগ্রগতি হয়নি। এ কারণে অপহরণের শিকার জেলেদের পরিবারে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। গত ৫দিনের ব্যবধানে এসব ডাকাতির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

মালিক সূত্র জানায়, প্রত্যেকের আত্মীয়-স্বজনকে মুক্তিপণের এক লাখ টাকা করে জোগাড়ের জন্য বলা হয়েছে। তবে এ টাকা নিয়ে কোথায় যোগাযোগ করতে হবে এ ব্যাপারে দস্যুরা কিছু জানায়নি।জেলা ট্রলার শ্রমিক সমিতি সূত্র জানায়, অপহৃত জেলেদের ট্রলার মালিক ও স্বজনেরা এর আগে প্রশাসনের কাছ থেকে আশানুরূপ সহযোগীতা না পাওয়ায় কোনো অভিযোগ জানায়নি।

ডাকাতি হওয়া ‘এফবি মায়ের দোয়া’ ট্রলারের মালিক নেজাম উদ্দিন বলেন, গত শনিবার (৩১ জুলাই) সাগরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় আমার ট্রলার। সাতদিন সাগরে মাছ শিকারের পর ফিরে আসার পথে বঙ্গোপসাগরের সোনাদিয়া চ্যানেলের অদূরে জলদস্যুরা গতিরোধ করে জাল, আহরণ করা প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ লুট করে। মাঝিসহ পাঁচ জেলেকে আটকে রেখেছে তারা। আটকে রাখা জেলেদের মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করেছে জলদস্যুরা।

তবে আটক রাখা জেলেদের উদ্ধারের জন্য কক্সবাজারের সকল স্টেশনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরমধ্যে যেসব নাম্বার থেকে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে তাও শনাক্ত করা হয়েছে। যে কোন সময় অভিযানের সফলতা আসবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

দস্যুরা বারবার এভাবে খুন লুটপাট ও অপহরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে। মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে না পারায় বরগুনার প্রায় শতাধিক জেলে এখনও জলদস্যুদের হাতে বন্দি আছে। কিন্তু প্রশাসনের প থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

Back to top button