গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু
সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সর্বশেষ পরিকল্পনা অনুযায়ী আজ শনিবার (৭ আগস্ট) সকাল ৯টায় শুরু হয়েছে এ কার্যক্রম। তা চলবে ১২ আগস্ট পর্যন্ত।এই গণটিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে ছয় দিনে প্রায় ৩২ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এই কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার পাচ্ছেন বয়স্ক ব্যক্তি, নারী ও শারীরিক প্রতিবন্ধীরা।
এই ক্যাম্পেইনের আওতায় দেশের ৪ হাজার ৬০০টি ইউনিয়নে, ১ হাজার ৫৪টি পৌরসভায় এবং সিটি করপোরেশন এলাকার ৪৩৩টি ওয়ার্ডে একযোগে টিকা দেয়া হচ্ছে। এতে ৩২ হাজার ৭০৬ জন টিকাদানকর্মী ও ৪৮ হাজার ৪৫৯ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছেন।
এর আগে গতকাল শুক্রবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর মহাখালীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) ভবন প্রাঙ্গণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের কাছে পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আগের দিনের আরেক দফা পরিবর্তিত কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
করোনার ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য এরইমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক স্বাক্ষরিত নির্দেশনা পরিচালক (স্বাস্থ্য), বিভাগীয় কমিটির সদস্য, সিটি করপোরেশন কমিটির সদস্য সচিব, জেলা কমিটির সদস্য সচিব, উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, সিভিল সার্জন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ও সব পৌরসভার মেডিকেল কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়।
অধ্যাপক খুরশীদ আলম জানান, আজ ৭ আগস্ট ২৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠী; অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠী, নারী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। তিনি জানান, সারা দেশে চার হাজার ৬০০টি ইউনিয়নে, এক হাজার ৫৪টি পৌরসভায় এবং সিটি করপোরেশন এলাকার ৪৩৩টি ওয়ার্ডে ৩২ হাজার ৭০৬ জন টিকাদানকারী ও ৪৮ হাজার ৪৫৯ জন স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে একযোগে টিকা দেওয়া হবে। আজ দেশের সব ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন এলাকায় টিকা দেওয়া হবে। ৮ ও ৯ আগস্ট ইউনিয়ন ও পৌরসভার বাদ পড়া ওয়ার্ডে এবং ৭ থেকে ৯ আগস্ট সিটি করপোরেশন এলাকায়, ৮ ও ৯ আগস্ট দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে এবং ১০ থেকে ১২ আগস্ট বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের জনগোষ্ঠীর ৫৫ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
টিকাগ্রহণ ও টিকা নেয়ার পর করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এগুলো হলো- ১. আগামী ৭ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নির্ধারিত টিকাকেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কোভিড-১৯ টিকা দেয়া হবে। ২. সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা এলাকায়ও প্রতি ওয়ার্ডে ৭ থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত টিকা দেয়া হবে। ৩. যাদের বয়স ১৮ বা তদূর্ধ্ব তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রসহ নির্ধারিত টিকাকেন্দ্রে এসে ভ্যাকসিন গ্রহণ করার অনুরোধ করা হয়েছে। ৪. প্রথম দুই ঘণ্টা শুধু নারী ও ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে সকল পুরুষকে টিকা দেয়া হবে। ৫. যারা ইতোমধ্যে অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন তাদের নিবন্ধনের সময় উল্লিখিত টিকাকেন্দ্রে এসে টিকা গ্রহণ করার অনুরোধ করা হয়েছে।
টিকা নেয়ার পরে করণীয় ১. টিকা নেয়ার পর টিকাকেন্দ্রে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ২. টিকা নেয়ার পর যেকোনো রকম শারীরিক অসুবিধা হলে সাথে সাথে টিকাদানকর্মীকে খবর দিন। প্রয়োজনে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করুন। এছাড়া টিকা নেয়ার পরও জরুরি কাজে ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই সঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। একে অপর হতে অন্তত ছয় ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সাবান ও পানি দিয়ে ঘন ঘন ২০ সেকেন্ড ধরে দুই হাত ধুতে হবে। হাঁচি-কাশির সময় হাত/রুমাল দিয়ে নাকমুখ ঢেকে নিতে হবে।