হাওরে অভিজাত রিসোর্ট, ভাড়া নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে।হাওর অঞ্চলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে গিয়ে আবাসন-সংকটে দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সমস্যা দূর হতে যাচ্ছে।কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন একটি রিসোর্ট, যেখানে তারকা হোটেলের সমান সুযোগ-সুবিধা রয়েছে; কমতি নেই জাঁকজমকেরও।অবশ্য মালিকপক্ষ রিসোর্টের যে ভাড়া নির্ধারণ করেছে, তা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। এত বেশি ভাড়ার কারণে মধ্যবিত্তের পক্ষে সেখানে অবস্থান করা কঠিন হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুরে এর অবস্থান। স্থানীয় বাসিন্দা চিকিৎসক এ বি এম শাহরিয়ার তার পৈতৃক সম্পত্তিতে গড়ে তুলছেন এটি। সেখানে আছে একটি বিশাল পুকুর। এর চারদিক ঘিরেই গড়ে তোলা হয়েছে রিসোর্টটি। পুকুরের উত্তর পাশে রেস্টুরেন্ট আর দক্ষিণ পাশে গড়ে তোলা হয়েছে কটেজগুলো। এর চারদিকে লাগানো হাজারো গাছপালা। বিস্তীর্ণ হাওরে সবুজের এই সমারোহ দৃষ্টি কেড়ে নেবে মুহূর্তেই। কটেজগুলোর দক্ষিণে প্রায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ জলরাশি হাওরপ্রেমীদের চোখ জুড়াবে। বর্ষা মৌসুমে যাতায়াতের মাধ্যম নৌকা ও স্পিডবোট। তবে শুকনো মৌসুমে মোটরসাইকেল বা গাড়িযোগে অনায়াসে যাওয়া যাবে।
প্রায় ৩০ একর জমিতে রিসোর্টটি যেখানে গড়ে তোলা হচ্ছে, সেটি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের নিজের এলাকা। আর এ কারণেই এর নামকরণ করা হয়েছে প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট।মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুরে এর অবস্থান। স্থানীয় বাসিন্দা চিকিৎসক এ বি এম শাহরিয়ার তার পৈতৃক সম্পত্তিতে গড়ে তুলছেন এটি।
মোট ১০টি ডুপ্লেক্স কটেজ রয়েছে রিসোর্টটিতে। তবে সেগুলোর কাজ এখনো শেষ হয়নি। কটেজগুলোর ভেতরের অংশের কাজ শেষ হয়েছে। বাইরে রঙের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন মিস্ত্রিরা। আনুষ্ঠানিকভাবে ৬ আগস্ট রিসোর্টটির উদ্বোধন হওয়ার কথা থাকলেও চলমান শাটডাউনের কারণে তা পিছিয়ে যায়। বিধিনিষেধ উঠে গেলেই তা উদ্বোধন করা হবে বলে জানাচ্ছে তারা। এরই মধ্যে রিসোর্টটির নানা ছবি ছড়িয়েছে ফেসবুকে। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। সেই সঙ্গে যে ভাড়ার কথা জানানো হয়েছে, তা নিয়ে হচ্ছে ব্যাপক সমালোচনা। সেখানে এক রাত কাটাতে লাগবে ন্যূনতম ৮ হাজার টাকা। এ ভাড়ার সঙ্গে আবার যোগ হতে পারে ভ্যাট বা অন্যান্য খরচ। সেখানে সবচেয়ে কম টাকার ডিলাক্স স্যুটের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার টাকা। ভিআইপি স্যুটের ১২ হাজার টাকা, ভিভিআইপি স্যুটের ভাড়া ২০ হাজার টাকা আর প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটের ভাড়া ৪০ হাজার টাকা।
সেখানে আছে একটি বিশাল পুকুর। এর চারদিক ঘিরেই গড়ে তোলা হয়েছে রিসোর্টটি।
পুকুরের উত্তর পাশে রেস্টুরেন্ট আর দক্ষিণ পাশে গড়ে তোলা হয়েছে কটেজগুলো। এর চারদিকে লাগানো হাজারো গাছপালা। বিস্তীর্ণ হাওরে সবুজের এই সমারোহ দৃষ্টি কেড়ে নেবে মুহূর্তেই।কটেজগুলোর দক্ষিণে প্রায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ জলরাশি হাওরপ্রেমীদের চোখ জুড়াবে।বর্ষা মৌসুমে যাতায়াতের মাধ্যম নৌকা ও স্পিডবোট। তবে শুকনো মৌসুমে মোটরসাইকেল বা গাড়িযোগে অনায়াসে যাওয়া যাবে।
সমালোচকরা বলছেন, এখানে এক রাতে যে টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে, তার চেয়ে কম টাকায় কক্সবাজারসহ অন্যান্য জনপ্রিয় পর্যটন এলাকায় থাকা যাবে। একজন লিখেছেন, ৮ হাজার টাকা খরচ করে তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দার্জিলিংয়ে তিন দিন কাটিয়ে এসেছেন। তবে রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ বি এম শাহরিয়ার বলেন, ‘আমাদের রিসোর্টের পরিবেশ এবং সার্ভিস দেখে যারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন তারাই এখানে থাকবেন। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে উদ্বোধনের পরপর একটা স্পেশাল ডিসকাউন্ট থাকবে। তখন ভাড়াটা আসলে কম পড়বে।’
রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ বি এম শাহরিয়ার বলেন, ‘আমাদের রিসোর্টের পরিবেশ এবং সার্ভিস দেখে যারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন তারাই এখানে থাকবেন। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে উদ্বোধনের পরপর একটা স্পেশাল ডিসকাউন্ট থাকবে। তখন ভাড়াটা আসলে কম পড়বে।’
রিসোর্টের নামকরণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের মতো লোকের জন্ম এ এলাকায় না হলে এত উন্নয়ন হতো না। আমাদের জীবনযাত্রার মানেরও এত উন্নতি হতো না।‘আমাদের এলাকাকে সবাই জানে প্রেসিডেন্টের এলাকা। উনার এলাকাতে যেহেতু এই প্রথম কোনো রিসোর্ট করা হচ্ছে, তাই আমরা এর নামকরণ করেছি প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট।’
ডুবো সড়ক নির্মাণের পর থেকে কিশোরগঞ্জের হাওর নিয়ে কয়েক বছরে আগ্রহ বেড়েছে ব্যাপক। পানিতে ডুবে থাকা সড়কে গাড়ি চালিয়ে ফেসবুকে শেয়ার করছেন লাখ লাখ মানুষ। আর প্রতিদিনই দূর-দুরান্ত থেকে দলবেঁধে আসতে থাকা পর্যটকের সংখ্যাটা বিশাল। এ আগ্রহ বাড়িয়েছে ৮৭৪ কোটি টাকায় তিন উপজেলাকে একত্রিত করে নির্মাণ করা ‘অলওয়েদার রোড’, যা দিয়ে সারা বছরই চলাচল করা যায়। কেবল বর্ষায় চারপাশ ডুবে থাকার সময় নয়, শুকনো মৌসুমেও প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এখন ছুটে যাচ্ছে ঘন সবুজের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। তবে পর্যটকদের ব্যাপক আনাগোনা থাকলেও থাকা-খাওয়ার জন্য মানসম্মত কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এতে পর্যটকদের ফিরে আসতে হতো দিনে গিয়ে দিনে।
এ পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট রিসোর্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়। কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রাষ্ট্রপতিপুত্র রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এর ভিত্তি স্থাপন করেন। রিসোর্টটির কাজ চলার সময় অনেকে থাকা-খাওয়ার ভোগান্তি দূর হওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতেন। কিন্তু রিসোর্ট হওয়ার পরও তাদের দূর থেকে দেখেই ফিরতে হবে।