স্বামীর চাকরী যাওয়ার কারণ হেলেনা জাহাঙ্গীর।গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সরগরম হেলেনা জাহাঙ্গীর ইস্যু। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে আলোচিত এই ব্যবসায়ীর আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে।কুমিল্লার মেয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীরে ব্যবসায়ী হিসেবে উত্থান খুব বেশিদিন আগের নয়। অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় বিয়ে হয়ে যায় তার। হেলেনার নামের সঙ্গে যুক্ত হয় জাহাঙ্গীর। বিয়ের পর শেষ করেন স্নাতকোত্তর। এরপর উদ্যোক্তা হিসেবে পথ চলা শুরু।এফবিসিসিআই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একাধিক গণমাধ্যমকে হেলেনা জাহাঙ্গীরের দেয়া সাক্ষাৎকার সূত্রে জানা যায়, বিয়ের সময় স্বামী জাহাঙ্গীর আলম নারায়ণগঞ্জের একটি প্রতিষ্ঠিত পোশাক কারখানার তৎকালীন জিএম পদে চাকরি করতেন।চাকরিজীবী লীগ নিয়ে বিতর্কের জেরে আওয়ামী লীগ থেকে পদ হারানো দেশব্যাপী আলোচিত ও র্যাবের অভিযানে গ্রেফতারকৃত হেলেনা জাহাঙ্গীরের স্বামী জাহাঙ্গীর আলমকে সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইলের নিট কনসার্ন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালকের পদসহ (ইডি) প্রতিষ্ঠান থেকে মাত্র দেড় মাস আগে অব্যাহতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
নিট কনসার্নের মালিক জয়নাল আবেদীন মোল্লা ও তার ভাইয়েরা। এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও এমডি হলেন জয়নাল আবেদীন মোল্লা এবং পরিচালক তার ভাইয়েরা ও স্বজনরা। এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লার সঙ্গে হেলেনা জাহাঙ্গীরের স্বামীর নাম মিল থাকায় এভাবে তারা প্রচার চালাতেন বলে কর্তৃপক্ষ জানায়।নিট কনসার্ন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, হেলেনা জাহাঙ্গীর বিভিন্ন সময় বলে বেড়াতেন নিট কনসার্নের মালিক তারাই। এ নিয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীর বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেলফি দিয়েও প্রতিষ্ঠানটির মালিক প্রচার করতেন বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। এ কারণে হেলেনা জাহাঙ্গীরের স্বামী জাহাঙ্গীর আলমকে নির্বাহী পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি দিতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
নিট কনসার্ন কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৯৩ সালে হেলেনা জাহাঙ্গীরের স্বামী জাহাঙ্গীর আলম নিট কনসার্ন গ্রুপে প্রডাক্টশন ম্যানেজার (পিএম) হিসেবে যোগদান করেন। তখন ১০-১২ হাজার টাকা বেতন পেতেন বলে তারা জানান। যোগদানের পর থেকে জাহাঙ্গীর আলম স্ত্রীসহ পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের গলাচিপায় বসবাস করতেন। পরে তিনি পরিবার নিয়ে ৪-৫ বছর পর ঢাকায় চলে যান। হেলেনা জাহাঙ্গীরের স্বামী জাহাঙ্গীর আলম পরে নিট কনসার্নের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) হিসেবে পদোন্নতি পান। সর্বশেষ তিনি এই নিট কনসার্নের নির্বাহী পরিচালক (ইডি) পদে পদোন্নতি পেয়েছিলেন। এরপর থেকে জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীর বিভিন্ন সময় বলে বেড়াতেন নিট কনসার্নের মালিক তারাই।
এ বিষয়ে নিট কনসার্ন গ্রুপের পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা জানান, দেড় মাস আগে হেলেনা জাহাঙ্গীরের স্বামী জাহাঙ্গীর আলমকে নিট কনসার্নের ইডি পদসহ প্রতিষ্ঠান থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তার স্ত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীর সব স্থানে বলে বেড়াতেন তারাই নিট কনসার্নের মালিক। এমনকি তারা বিভিন্ন জায়গায় সেলফি তুলে বলে বেড়াতেন এ প্রতিষ্ঠানের মালিক তারাই। বিষয়টি আমরা জানতে পেরে হেলেনা জাহাঙ্গীরের স্বামী জাহাঙ্গীর আলমকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেই। আমরা এতদিন জানতাম না তার স্ত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীর রাজনীতি করেন। পরে বিষয়টি জেনেছি। তিনি আরও বলেন, তারা আমাদের প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে একই এলাকায় নিট কনসার্ন প্রিন্টিং ইউনিট নামে একটি প্রতিষ্ঠান দিয়েছেন। এ বিষয়ে আমরা এ্যাডভোকেটের সঙ্গে কথা বলেছি। শীঘ্রই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাতে ওই ফ্যাক্টরির নাম পরিবর্তন করা হয়।