ভিকারুননিসার অধ্যক্ষকে নিয়ে ব্যারিস্টার সুমনের বক্তব্য
ভিকারুননিসার অধ্যক্ষকে নিয়ে ব্যারিস্টার সুমনের বক্তব্য।ভিকারুননিসা স্কুলটি সারাদেশের মধ্যে অনন্য উচ্চতায় অবস্থান করা একটি প্রতিষ্ঠান। তার সুনাম যেন কস্তুরির সুবাসের মত ছড়িয়ে পড়েছে দেশবিদেশে। এমন একটি প্রতিষ্ঠান প্রধানের এমন অমার্জনীয় শব্দে সবাই হতচকিত।ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপালের সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া দুটি ফোনালাপ নিয়ে সারাদেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। প্রথম ফাঁস হওয়া ফোনালাপটিতে তিনি বেশ কয়েকবার তাঁর অবস্থানের সঙ্গে মানানসই নয় এমন সব শব্দ উচ্চারণ করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি নিজেকে শক্তিশালী প্রমাণ করতে চেয়েছেন। কিন্তু তাঁর এই নিম্নরুচির শব্দ প্রয়োগের ফলে সারা দেশের শিক্ষক ও অভিভাবক সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষক সমাজের উঁচু মাথাটা যেন নীচু হয়ে গিয়েছে। যদিও অধ্যক্ষ দাবি করেছেন, এগুলো সুপার এডিট করা।
এ ঘটনায় কামরুন নাহারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। অন্যথা তাকে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সরিয়ে ভিকারুননিসার সম্মান রক্ষা করতে বলেছেন তিনি। মঙ্গলবার রাতে এক ফেসবুক লাইভে ব্যারিস্টার সুমন এই আহ্বান জানান।ফেসবুক লাইভে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ভিকারুননিসা নূন স্কুল দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ভিকারুননিসায় সব মেধাবী শিক্ষার্থীরা পড়ে থাকেন। সবদিক দিয়েই তারা এগিয়ে। বাংলাদেশের প্রতিটি জায়গায়ই ভিকারুননিসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু বর্তমানে যিনি এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, তার একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়ে গেছে। এই অডিও রেকর্ডটি শুনে আমি খুবই কষ্ট পেয়েছি। সেগুলো আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই।
প্রতিষ্ঠানটি মূলত অধ্যক্ষ হামিদা আলীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলেই এ পর্যায়ে আসতে পেরেছে এবং অনিচ্ছাসত্ত্বেও তারঁ চলে যাওয়ার পরে এখানে একজন দক্ষ অধ্যক্ষের অভাব সবসময়ই ছিল।বিদ্যালয়টির সুনামের কারণেই এখানে সবসময়ই ভর্তির একটা চাপ ছিল। যেহেতু দেশের প্রভাবশালীদের মেয়েরা এখানে লেখাপড়া করে, এখানকার গভর্নিং বডির সদস্যরাও যথেষ্ট প্রভাবশালী। তাদের মধ্যে অনেকেই অনৈতিক সুবিধা আাদায় করার জন্য অধ্যক্ষের প্রতি সর্বপ্রকার চাপ প্রয়োগ করেন। জানামতে আগের অধ্যক্ষদের অনেকেই তাদের চাপে নতি স্বীকার করে কিছু সুবিধা দিয়ে তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতেন।
শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সুমন বলেন, অডিওতে বলা কথাগুলো যদি সঠিক হয়ে থাকে, তাহলে অধ্যক্ষ কামরুন নাহারের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা উচিত। নৈতিকতার স্বার্থেই এটা করা উচিত। অডিওতে বলা বক্তব্য সত্য হওয়ার পরও যদি অধ্যক্ষকে সরিয়ে না দেয়া হয়, তাহলে ভিকারুননিসায় সন্তান ভর্তি করতে অভিভাবকরা উৎসাহ হারাবেন। তাই ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ পদ থেকে আপাতত তাকে সরিয়ে দেয়াটাই হবে উত্তম সিদ্ধান্ত।সুমন বলেন, প্রথমে আমি বলতে চাই, কোনো মানুষের ব্যক্তিগত কথা ফাঁস হওয়া উচিত না। এটা আইনবিরোধী, সংবিধানবিরোধী। আমি মনে করি যারা ফাঁস করেছেন, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। এটি সরকারেরই দায়িত্ব। অডিওটি যদি সঠিক হয়ে থাকে, কথোপকথন যদি প্রিন্সিপালের হয়ে থাকে, তাহলে আমি বলব এখানে আইনের বিষয় না। নৈতিকতার গ্রাউন্ডে একজন শিক্ষকের যে ভাষায় কথা বলা উচিত, তিনি সেভাবে বলেননি।
অডিওর তথ্য তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, উনি এক জায়গায় বলেছেন, আমি পিস্তল বালিশের নিচে নিয়ে ঘুমাই। এছাড়াও বিভিন্ন কথা বলেছেন। যেগুলো আসলে উচ্চারণ করার মতো না।তিনি বলেন, আমার অনেক কষ্ট হয়েছে, ভিকারুননিসার সফল যারা আছেন, তারা আজ কী চিন্তা করছেন। অনেকেই হামিদা ম্যাডামের কথা বলছেন। হামিদা ম্যাডামের সময়ে কী ভিকারুননিসা ছিল, আর এখন কী অবস্থা।সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, মেয়েদের জন্য সবচেয়ে ভালো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ তার মতো নারী হতে পারে না। তাকে সরিয়ে দিন। তাহলে বাংলাদেশে মেয়েদের গর্বের জায়গা, ভিকারুননিসার সম্মান রক্ষা পাবে।