হেলেনার প্রতারণার জাল দিয়ে বিস্ময়কর উত্থান।গত কয়েক বছর ধরে আলোচিত-সমালোচিত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও নারী উদ্যোক্তা হেলেনা জাহাঙ্গীর। সম্প্রতি ‘আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি সংগঠনের পোস্টারকে ঘিরে বিতর্কিত হন। আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য পদ বাতিল করা হয় তার।এরপরই একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে তার নানা অপকর্মের কাহিনী। ধূর্ত প্রকৃতির হেলেনা জাহাঙ্গীর যখন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে নানা ছুতোয় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোকদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা আদায় করেছেন।
ফেসবুকে বেশ সক্রিয় হেলেনা জাহাঙ্গীর মূলত একজন নারী উদ্যোক্তা হলেও কিছুদিন ধরে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি কুমিল্লা-৫ আসনের উপনির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চেয়েও আলোচনায় আসে।ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সদস্য ও নির্বাচিত পরিচালক হেলেনা জাহাঙ্গীর। পোশাক শিল্প মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএরও সদস্য তিনি।হেলেনা জাহাঙ্গীর প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পুরস্কৃতও হয়েছেন রোটারি ক্লাবের একজন ডোনার হিসেবে।
হেলেনা জাহাঙ্গীরের জন্ম কুমিল্লা জেলায়। বাবা মরহুম আবদুল হক শরীফ ছিলেন জাহাজের ক্যাপ্টেন। সেই সুবাদে তিনি বেড়ে উঠেছেন চট্টগ্রামের হালিশহরের মাদারবাড়ী সদরঘাট এলাকায়। লেখাপড়া করেছেন স্থানীয় কৃষ্ণচূড়া স্কুলে। চাকরিসূত্রে তার বাবা রাশিয়ায় চলে গেলে মায়ের সঙ্গে গ্রামে ফিরে যান হেলেনা। ১৯৯০ সালে বিয়ে করেন ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমকে। তারপর থেকে তার নামের পাশে যুক্ত হয় জাহাঙ্গীর। বর্তমানে তিনি হেলেনা জাহাঙ্গীর নামেই পরিচিত। বিয়ের কয়েক বছর পর মিরপুরে ভাড়া করা দুটি রুম নিয়ে শুরু করেন কাপড়ের ব্যবসা। অল্প কিছুদিনের মধ্যে দেখেন সফলতার মুখ। ব্যবসার কারণে পরিচিত হতে থাকেন সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তির সঙ্গে। ব্যবসায়িক সফলতা বিস্তারের পাশপাশি তার বিচরণ হয় রাজনৈতিক অঙ্গনে। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে কম সময়ের ভেতরে ব্যবসায়িক প্ল্যাটফরমে পরিচিত হয়ে যান। জয়যাত্রা গ্রুপের ব্যানারে একে একে গড়ে তোলেন একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আওয়ামী লীগের উপ-কমিটিতেও জায়গা করে নেন। ভিন্ন ভিন্ন বিতর্কে জড়িয়ে হেলেনা প্রায়ই আলোচনায় উঠে এসেছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু বিতর্কে জড়িয়ে শেষ রক্ষা হয়নি।
গত বৃহস্পতিবার রাতে র্যাব অভিযান চালায় তার বাসায়। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে তার বাসা থেকে বিভিন্ন নথিপত্র উদ্ধার করেছে র্যাব। সেখানে ১৪টি প্রতিষ্ঠানের প্যাড পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, হেলেনা ফাউন্ডেশন, হেলেনা শিশু কল্যাণ সংঘ, হেলেনা সেবা সংঘ, হেলেনা আলোর দিশারী ফুটবল ক্লাব, হেলেনা সারগাম একাডেমি, হেলেনা চক্ষু হাসপাতাল ও জয়যাত্রা অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডটকমসহ আরও একাধিক প্রতিষ্ঠানের প্যাড। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব তার কাছে জানতে চেয়েছিল ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়গুলো কোথায়? তিনি তার কোনো উত্তর দিতে পারেননি। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম ভাঙিয়ে তিনি সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে বিভিন্ন কাজের তদবির করে আর্থিক সুবিধা নিতেন। সূত্র জানায়, হেলেনার সচিবালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তরে যাতায়াত ছিল অবাধে। সচিবালয়ে যাতায়াত করতে পাস পাওয়ার ব্যাপারে কোনো অসুবিধা হতো না। বিশেষ করে গণপূর্ত অধিদপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে তার বিশেষ সম্পর্ক ছিল।
র্যাব জানায়, প্রতারণার জাল বিস্তার করার জন্য হেলেনা খুলে বসেন জয়যাত্রা নামে একটি আইপি টেলিভিশন। ওই টেলিভিশনের কোনো অনুমতি ছিল না বলে র্যাব জানিয়েছে। রাজধানীর পল্লবীতে দুইটি ফ্ল্যাটে তিনি ওই টেলিভিশন খুলেছিলেন। টেলিভিশনের জন্য হেলেনা ২০ লাখ টাকা খরচ করে স্টুডিও নির্মাণ করেছিলেন। মিডিয়া কেন্দ্রিক প্রভাব ও প্রতিপত্তির কারণে টেলিভিশন তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।এছাড়া প্রিন্টিং, অ্যামব্রয়ডারি, প্যাকেজিং, স্টিকার এবং ওভেন গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার তিনি। জয়যাত্রা গ্রুপের আওতায় এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি। সব মিলিয়ে ১০ হাজারেও বেশি কর্মী আছে তার এসব প্রতিষ্ঠানে।
ওদিকে গতকাল বিকালে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করেছে র্যাব। ডিজিটাল প্ল্যাটফরম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গের সম্মানহানি করার অপচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে এ মামলায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন গুলশান থানার ওসি (তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলাম। এরআগে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানিয়েছিল অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্মানহানির অভিযোগে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করা হবে। এ ছাড়া তার বাসা থেকে মাদক, বিদেশি মুদ্রা ও বন্যপ্রাণীর চামড়া জব্দের ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা করা হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও তথ্য মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন ছাড়া জয়যাত্রা নামক টেলিভিশন চ্যানেল পরিচালনার কারণে আলাদা টেলিযোগাযোগ আইনে পৃথক পাঁচটি মামলা করা হবে।
সূত্র জানায়, ঢাকাসহ সারা দেশে ওই ভুয়া আইপি টিভির জন্য তিনি ৮০০ সাংবাদিক নিয়োগ দিয়েছেন। শুধু ঢাকা শহরে তার সাংবাদিকের সংখ্যা ২০০ জন। বিভাগীয় শহরগুলোতে ২৫ জন করে ওই টিভির সাংবাদিক তিনি নিয়োগ দিয়েছেন। এ ছাড়াও জেলা ও থানা কেন্দ্রিক ওই টিভির সাংবাদিক নিয়োগ দিয়েছিলেন। তাদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। হেলেনা র্যাবের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, জেলা কেন্দ্রিক সাংবাদিক নিয়োগে তিনি ১ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। তাদের তিনি একটি করে জয়যাত্রা টিভির আইডি কার্ড দিয়েছেন। ২ বছরের চুক্তিতে ওই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাদের কোনো মাসিক বেতন দেয়া হবে না বলে জানিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও তার ভুয়া টিভিতে লোকজন জয়েন করেছে। কেন এত টাকা দিয়ে তার টিভিতে জয়েন করেছে তার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে র্যাব। যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের নাম ও ঠিকানা এবং এরা মূলত ওই এলাকায় কী কাজ করেন তা বের করার জন্য কাজ করছে র্যাব। সূত্র জানায়, জয়যাত্রা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হেলেনা। আর ওই টিভি পরিচালনা করতো শাহদাৎ ও সুমন নামে দুই ব্যক্তি। হেলেনা গ্রেপ্তার হওয়ার পর তারা পলাতক রয়েছে।সূত্র জানায়, হেলেনা যেখানেইযেতো তার সঙ্গে আরও দুইটি গাড়ি তাকে এসকর্ট করে নিয়ে যেতো। গাড়িতে লাগানো থাকতো ছোট ফ্ল্যাগ।
এ ছাড়াও হেলেনা যেখানেই যেতেন তার সঙ্গে ২ জন সুন্দরী থাকতো। তারা হেলেনার ব্যক্তিগত সহকারী এবং নিজেদের জয়যাত্রা টেলিভিশনের সাংবাদিক পরিচয় দিতেন। তারাও গাঢাকা দিয়েছেন। সূত্র জানায়, রাত হলেই হেলেনা ঢাকার বিভিন্ন ক্লাব পাড়ায় বিচরণ করতেন। ঢাকার একাধিক ক্লাবে তিনি প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম ভাঙিয়ে যাতায়াত করতেন। গুলশান অল কমিউনিটি ক্লাব, বিজিএমইএ অ্যাপারেল ক্লাব, বোট ক্লাব, গুলশান লেডিস ক্লাব, উত্তরা লেডিস ক্লাব, গুলশান ক্লাব ও বারিধারা ক্লাবে যাতায়াত করতেন। হেলেনা নিজেকে সিস্টার হেলেনা পরিচিত করার জন্য ঢাকা এবং কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন স্থানে পোস্টারিং করেছে। এজন্য তার লোকজন তাকে সিস্টার বলে ডাকতেন। কেউ তাকে ম্যাডাম বা স্যার বললে তিনি তাদের সিস্টার বলে ডাকার আদেশ দিতেন বলে র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন। সূত্র জানান, বাংলার মাদার তেরেসা উপাধি পাওয়ার জন্য হেলেনা নিজের উদ্যোগে গড়ে তুলেছিলেন হেলেনা ফাউন্ডেশন। তবে সেটি প্যাড সর্বস্ব। সেটির কোনো কার্যালয় ছিল না। কুমিল্লার একাধিক এলাকায় ৪ বার গরিব লোকদের আর্থিক সহযোগিতার ফটোসেশন করে তিনি এলাকার বিভিন্ন স্থানে পোস্টারিং করেছেন।
সূত্র জানায়, হেলেনা মূলত আলোচনায় আসেন চাকরিজীবী লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ঘোষণা দিয়ে পোস্টার ছাপানোর পর। পোস্টারে মাহবুব মনির নামে এক ব্যক্তিকে সাধারণ সম্পাদক পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছে। মনির এখন লাপাত্তা। তাকে খুঁজছে র্যাব। চাকরিজীবী লীগ এ সদস্যপদ দেয়ার কথা বলে অনেকের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগেই তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে সোয়া ১২টা। গুলশানের ৩৬ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাড়ি। এই বাড়িতেই থাকতেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসুর নেতৃত্বে র্যাব সদস্যরা হেলেনার বাসায় প্রবেশ করে রাত ৮টায়। দীর্ঘ প্রায় ৪ ঘণ্টার অভিযান শেষে রাত সোয়া ১২টায় র্যাব তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, ক্যাসিনো সরঞ্জাম ও হরিণের চামড়া উদ্ধার করে। আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সদর দপ্তরে নেয়া হয়। পরে রাতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের মালিকানাধীন জয়যাত্রা টেলিভিশনের অফিসে অভিযান চালায় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানের পর র্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে হেলেনার বাসায় অভিযান চালিয়েছেন তারা। আর গতকাল র্যাবের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফরম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গের সম্মানহানি করার অপচেষ্টার অভিযোগে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অস্ট্রিয়া প্রবাসী আলোচিত সেফুদার সঙ্গে হেলেনার লেনদেন ছিল। সেফুদা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের মাধ্যমে দেশবাসীর নজর কাড়তে চেষ্টা করেন। তাকে তিনি নাতি ডাকতেন। সেফুদার সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল এবং তার সঙ্গে লেনদেনও ছিল। তিনি বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীর অপকৌশলের মাধ্যমে নিজেকে ‘মাদার তেরেসা’, ‘পল্লীমাতা’, ‘প্রবাসীমাতা’ হিসেবে পরিচিতি পেতে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। তার পৃষ্ঠপোষকতায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া খেতাবের অপপ্রচার চালাতো। বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গ থেকে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের নামে অর্থ সংগ্রহ করতেন। যা মানবিক সহায়তায় ব্যবহারের চেয়ে খেতাব প্রচার-প্রচারণায় বেশি ব্যবহার করা হতো। হেলেনা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রেখে নিজের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেন। তিনি ১২টি ক্লাবের সদস্যপদে রয়েছেন বলে র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।