গেজেট আকারে প্রকাশ পেল ডিজিটাল কমার্স পরিচালনার নির্দেশিকা ২০২১
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১।
ডিজিটাল কমার্স পরিচালনার নির্দেশিকা ২০২১ : ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ‘ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা ২০২১’ জারি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেল। ৬ জুলাই রোববার এই নির্দেশিকার গেজেট প্রকাশ করা হয় । এর আগে ডিজিটাল বাণিজ্য পরিচালনা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় নির্দেশিকার খসড়ায় ‘কিছু’ সংশোধন এনে তা চূড়ান্তকরণ করা হয়। এটি তখন আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছিলো। ই-কমার্স বা ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১-এর চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে। ডিজিটাল কমার্স নীতিমালার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো হলো-
১. মার্কেটপ্লেস এর স্বত্তাধিকারী তার তালিকাভূক্ত বিক্রেতার বিক্রয়কৃত পণ্যের দাম বুঝে পাওয়ার সর্বোচ্চ ১০ (দশ) দিনের মধ্যে প্রযােজ্য কমিশন ও ডেলিভারি চার্জ কেটে রেখে সংশ্লিষ্ট তালিকাভূক্ত বিক্রেতাকে পুরাে দাম পরিশােধ করতে হবে। তবে মার্কেটপ্লেস এর স্বত্তাধিকারী ও বিক্রেতা বা মার্চেন্ট এর মধ্যে ভিন্নতর কোন চুক্তি থাকলে সে অনুযায়ী পাওনা পরিশােধ করা যাবে।
২. বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শিত পণ্য বিক্রেতা বা তার সাথে চুক্তিবদ্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে এবং বিজ্ঞপ্তিতে কী পরিমাণ পণ্য স্টকে রয়েছে তা উল্লেখ করতে হবে এবং প্রতিটি বিক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথে উক্ত পণ্যের স্টক হালনাগাদ করতে হবে। বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শিত পণ্য বিক্রেতা বা তার সাথে চুক্তিবদ্ধ ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে না থাকলে স্পস্টভাবে “ষ্টকে নেই” বা “Stock out” কথাটি স্পষ্টভাবে পণ্যের পাশে লিপিবদ্ধ থাকতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে রেডি টু শিপ অবস্থা ব্যতিরেকে কোন ধরনের পেমেন্ট গ্রহণ করা যাবে না।
৩. অগ্রিম মূল্য আদায়ের ক্ষেত্রে প্রদর্শিত পণ্য অবশ্যই দেশের ভিতরে ‘রেডি টু শিপ’ (মার্কেটপ্লেসের নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে বা মার্কেটপ্লেসে নিবন্ধিত থার্ড পার্টি বিক্রেতারনিয়ন্ত্রণে) পর্যায়ে থাকতে হবে| সম্পূর্ণ মূল্য গ্রহণের পরবর্তি ৭২ ঘন্টার মধ্যে ডেলিভারী পারসন বা প্রতিষ্ঠাণের হস্তান্তর করার মত অবস্থায় নেই এমন পণ্যের ক্ষেত্রে পণ্যমূল্যের ১০% এর বেশি অগ্রিম গ্রহণ করা যাবে না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকঅনুমােদিত এসক্রো সার্ভিস এর মাধ্যমে ১০০% পর্যন্ত অগ্রিম গ্রহণ করা যাবে।
৪. বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শিত পণ্যের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশােধের পরবর্তি ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পণ্য বা পণ্য সামগ্রী ডেলিভারীম্যান বা ডেলিভারী সংস্থার নিকট হস্তান্তর করতে হবে এবং ক্রেতাকে তা টেলিফোন, ই-মেইল বা এসএমএস এর মাধ্যমে জানাতে হবে। এক্ষেত্রে ডেলিভারী সংস্থা বা মার্কেটপ্লেস ট্র্যাকিং সিস্টেম ব্যবহার করার উপর গুরুত্ব দেয়া হবে।
৫. সম্পূর্ণ মূল্য পরিশােধের ক্ষেত্রে ক্রেতা ও বিক্রেতা একই শহরে অবস্থান করলে ক্রয়াদেশ গ্রহণের পরবর্তি সর্বোচ্চ ০৫ (পাঁচ) দিন এবং ভিন্ন শহরে বা গ্রামে অবস্থিত হলে সর্বোচ্চ ১০ (দশ) দিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারী প্রদান করতে হবে।
৬. ক্রেতা কোন মাধ্যমে (ডেবিট, ক্রেডিট কার্ড, ব্যাংক ট্রান্সফার, মােবাইল ব্যাংকিং, অন্যান্য) অগ্রীম মূল্য পরিশােধ করলে এবং বিক্রেতা কোন কারণে নির্ধারিত সময়ে সে পণ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে মূল্য পরিশােধের সর্বোচ্চ ০৭ দিন (সংশ্লিষ্ট অর্থ প্রদানকারীমাধ্যমের ব্যবহৃত সময় ব্যতিত) এর মধ্যে ক্রেতার পরিশােধিত সম্পূর্ণ অর্থ যে মাধ্যমে ক্রেতা অর্থ পরিশােধ করেছেন সেই একই মাধ্যমে (ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ব্যাংক ট্রান্সফার, মােবাইল ফিনান্সিয়ািল সার্ভিস ইত্যাদি) ফেরত প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রেকোন চার্জ থাকলে মার্কেটপ্লেস বা বিক্রেতাকে তা বহন করতে হবে। মূল্য ফেরতের বিষয়ে ক্রেতাকে ইমেইল, এসএমএস, ফোন বা অন্য মাধ্যমে অবহিত করতে হবে।তবে এ ক্ষেত্রে ক্রেতার পরিশােধিত মূল্যের অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করা যাবে না।
৭. নির্দেশিকার বিধান প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে কর্তৃপক্ষ বিক্রেতা বা মার্কেটপ্লেস এর ট্রেড লাইসেন্স, কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন, ভ্যাট নিবন্ধন ইত্যাদি বাতিল করাসহ সংশ্লিষ্ট মার্কেটপ্লেস নিষিদ্ধ করণসহ অনান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।
৮. এ নির্দেশিকা প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি বা ক্রেতা বা কোন সরকারী বা বেসরকারী সংস্থা জাতীয় ভােক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্টআদালতে আইনানুগ প্রতিকারের জন্য অভিযােগ দায়ের করতে পারবে।
পুরো নির্দেশিকা দেখা যাবে এই ঠিকানায় ।