কঠোর বিধিনিষিধ শিথিল করায় আগামী ১৫ তারিখ থেকে দেশে চলবে গণপরিবহন। তবে বুধবার (১৪ জুলাই) রাত থেকেই দূরপাল্লার বাস চলবে। বুধবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, টিকিট কাউন্টার খুলে অনেকে টিকিট বিক্রি করছেন। এছাড়া, চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। তবে এসময়ে গণপরিবহন চলাচলের জন্য ছয়টি শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এসব শর্ত বেঁধে দেয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
বিজ্ঞপ্তিতে যেসব শর্ত রয়েছে-
১. একজন যাত্রীকে বাস ও মিনিবাসে পাশাপাশি দুটি আসনের একটি আসনে বসিয়ে অন্য আসনটি অবশ্যই ফাঁকা রাখতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুাযায়ী শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। আড়াআড়িভাবে আসন বিন্যাস করতে হবে। মোটরযানের নিবন্ধন সনদে উল্লেখ করা আসন সংখ্যার অর্ধেকের বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না।
২. সমন্বয় করা ভাড়ার (বিদ্যমান ভাড়ার ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়ার) অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না।
৩. গণপরিবহনে যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার, কন্ডাক্টর, হেলপার ও টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রের দায়িত্ব পালনকারীদেরমাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. যাত্রার শুরু ও শেষে বাস বা মিনিবাস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নসহ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৫. যানবাহনের মালিকদের যাত্রীদের হ্যান্ডব্যাগ, মালপত্র, জীবাণুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গণপরিবহনে যাত্রী ওঠানামা করতে হবে।
বুধবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, টিকিট কাউন্টার খুলে অনেকে টিকিট বিক্রি করছেন। এছাড়া, চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেছেন, ‘বুধবার রাত থেকেই ঢাকা থেকে ছেড়ে যাবে দূরপাল্লার বাস। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে চলবে সিটি সার্ভিস থেকে শুরু করে সব ধরনের গণপরিবহন।’
সাকুরা পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মোহাম্মদ হাবিব বলেন, আজ রাত থেকেই বাস ছাড়া হবে। তবে কতজন যাত্রী নিয়ে বাস ছাড়বে সেটা এখনো ঠিক হয়নি। মালিক পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আজ বিকেলে নির্দেশনা আসবে। তিনি বলেন, ঈদের সময় অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস ছাড়লে ক্ষতি হয়। কারণ যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়লেও আসতে হয় খালি। একটা গাড়ি রাস্তায় নামলে বা ঢাকা থেকে বরিশাল গেলে খরচ হয় ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা। কিন্তু অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গেলে আসে ১৬ হাজার টাকা।
ঢাকা থেকে কক্সবাজার রুটের রিল্যাক্স পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মালেক হোসেন বলেন, আমাদের বাস আজ রাত থেকেই ছেড়ে যাবে। আপাতত অর্ধেক যাত্রী নিয়েই বাস ছাড়বে। মালিকপক্ষ থেকে পরবর্তী নির্দেশনা আসলে আমরা সেই অনুযায়ী বাস ছাড়বো।
এর আগে বিধিনিষেধে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় এ খাতের শ্রমিকরা পড়েছিলেন বিপাকে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুর দাবিও জানিয়ে আসছিলেন তারা। মহাখালীতে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা কিশোরগঞ্জ রুটে অনন্যা পরিবহনসহ উত্তরবঙ্গে রুটে একতা, এনা ও সাদিকা পরিবহানের বাসগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির সব শর্ত নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অনন্যার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরান রশীদ তুহিন জানান, এক আসন ফাঁকা রেখেই চালানো হবে বাস।