করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও শনাক্তের রেকর্ড
বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন
আজ রবিবার (১১ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে সর্বোচ্চ ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ১৩৩ জন এবং মহিলা ৯৭ জন। এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু বরণ করেছেন ১৬ হাজার ৪১৯ জন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একই সময়ে ৬১৩টি পরীক্ষাগারে ৪০ হাজার ১৫টি নুমনা পরীক্ষায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৮৭৪ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০ লাখ ২১ হাজার ১৮৯ জন।
বয়স বিবেচনায় মৃতের সংখ্যা ২১ থেকে ৩০ বছরের ৭ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১৯ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৪২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৫১ জন এবং ৬০ উর্ধ্বো ১১১ জন। বিভাগওয়ারি মৃতের সংখ্যায় বলা হয়েছে, ঢাকা বিভাগে ৫৬ জন, চট্টগ্রামে ৩৯ জন, রাজশাহীতে ২৬ জন, খুলনায় ৬৬ জন, বরিশালে ৮ জন, সিলেটে ৮ জন, রংপুরে ২২ জন এবং ময়মনসিংহে ৫ জন। এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৬৯ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৪২ জন এবং বাসাতে ১৯ জন। উল্লিখিত সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৩৬২ জন। এ পর্যন্ত করোনামুক্ত হয়েছেন ৮ লাখ ৭৪ হাজার ৫০১ জন।
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। জুলাই মাসে দৈনিক শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের উপরে আছে। মোট গড় হার ১৪ শতাংশের উপরে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলা যায়।
বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় প্রথমে ২১ এপ্রিল ও পরে তা বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিধিনিষেধ জারি করেছিল সরকার। এরপর সেটি ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ১৬ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছে। এর মধ্যেই আবার ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউনের জারি করেছে সরকার, যা আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে।