শ্বশুর-শাশুড়ির সহযোগিতায় গৃহবধূকে ধর্ষণ করলো স্থানীয় ইউপি মেম্বার

বিয়ের পাঁচ মাস না যেতেই শ্বশুর-শাশুড়ির সহযোগিতায় গৃহবধূকে ধর্ষণ করেছেন স্থানীয় ইউপি মেম্বার। খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার ২নং পাতাছড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।স্থানীয় মেম্বার মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে ওই গৃহবধূ একাধিকবার জোরপূর্বক ধর্ষণের মামলা করেছেন রামগড় থানায়। মামলার পরপরই মেম্বার ও মেম্বারের লোকজনের হুমকিতে ধর্ষিত গৃহবধূ ও তার পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে জানান মামলার বাদী ওই গৃহবধূর পিতা।

তিনি জানান, পাঁচ মাস আগে পাতাছড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের এক যুবকের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের মাসখানেক পরই স্থানীয় মেম্বার মহিউদ্দিনের কুনজরে পড়ে সে। বিভিন্ন অজুহাতে মহিউদ্দিন তার মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে যাতায়াত করতে থাকে। একপর্যায়ে শ্বশুর ও শাশুড়ির সহযোগিতায় তার মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে মহিউদ্দিন।

এদিকে ধর্ষণের বিষয়টি ওই গৃহবধূ তার স্বামীকে জানান। তার স্বামী এ ঘটনার প্রতিবাদ করেন। প্রতিবাদের কারণে স্বামীকে বিভিন্নভাবে লোভ দেখিয়ে মাদকাসক্ত করে নিজের পক্ষে নিয়ে আসে মেম্বার মহিউদ্দিন। এরপর প্রকাশ্যেই শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সহযোগিতায় আরও তিনবার ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে মহিউদ্দিন।

ধর্ষণের কথা কাউকে জানালে তাকে ও পরিবারের অন্য সদস্যদের হত্যারও হুমকি দেয় মেম্বারসহ স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি। মেম্বার মহিউদ্দিন ওই বাড়িতে প্রায়ই মদ, গাঁজা ও জুয়ার আসর বসাতো এবং অন্য মেয়েদের নিয়ে অসামাজিক কাজকর্ম করত।
ওই গৃহবধূকে দিয়ে খারাপ কাজের ব্যবসা করাতে নানাভাবে চাপ ও নির্যাতন করত। এসব অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে দুইবার আত্মহত্যা করতে গিয়েও বিবাদীদের নজরদারির কারণে পারেনি। সর্বশেষ মহিউদ্দিন আবারো ধর্ষণ করতে গেলে গত ৪ মার্চ নানার বাড়ি পালিয়ে যায় ওই গৃহবধূ।

ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর পিতা বলেন, বিষয়টি আমাকে জানালে আমি খবর পেয়ে নোয়াখালী থেকে শনিবার রামগড় থানায় চারজনকে আসামি করে লিখিতভাবে অভিযোগ করি। পুলিশ তদন্তের কারণ দেখিয়ে এতদিন মামলা না নিলেও বুধবার মামলা নেয়। শনিবার অভিযোগ করার পর থেকেই মহিউদ্দিন ও তার পক্ষের লোকজন নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি।

ধর্ষণের শিকার ওই নারী বলেন, আমার স্বামী একজন মাদকসেবনকারী। মহিউদ্দিন ও আমার স্বামী একসঙ্গে মাদকসেবন করে থাকে। মহিউদ্দিন আমার শ্বশুর-শাশুড়িকে হাত করে বহুবার আমার ইজ্জত নষ্ট করেছে। একপর্যায় ওদের নির্যাতন সইতে না পেরে আমি পাতাছড়া আমার নানার বাড়িতে পালিয়ে আসি। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

তিনি বলেন, আমি মেম্বার মহিউদ্দিনসহ আমার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির উপযুক্ত শাস্তি চাই। আর এ ধরনের স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি যাতে কোনো অভাগা নারীর জীবনে না আসে সেটি কামনা করি। এ বিষয়ে রামগড় থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনির হোসেন জানান, ধর্ষণের অভিযোগে থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা ও জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Exit mobile version