যুবককে পিটিয়ে হাতে ইয়াবা তুলে দিলেন মাদক কর্মকর্তা!

বরিশালে এক যুবককে আটকের পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অফিসকক্ষে নিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। এছাড়া মারধরের পর যুবকের হাতে বেশ কিছু ইয়াবা তুলে দিয়ে স্বীকারোক্তি নেন মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা। এমনই একটি নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ফাঁস হয়েছে। অকারণে নির্যাতন করা হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগী যুবক মারুফ সিকদারের। এ ঘটনার বিচার দাবি করেছে স্থানীয়রা।তবে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো কিংবা নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আব্দুল মালেক তালুকদার।অপরদিকে, এ ব্যাপারে তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত পরিচালক।

হাতে হ্যান্ডকাফ। এর মধ্যেই হাতে তুলে দেয়া হয় কয়েক পিস ইয়াবা। এরপর ওই ইয়াবা গুণতে বলা হয়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে পানি চাইলেও করা হয় নিষ্ঠুর আচরণ। সাথে ছিলো অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল। পাশেই লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আব্দুল মালেক তালুকদার। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আব্দুল মালেক আটক মারুফ সিকদারকে এভাবেই নির্যাতন করেন এবং তিনিই মারুফের হাতে ইয়াবা তুলে দেন।মারুফ জানান, তাকে নির্যাতন করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা। ১৭ দিন হাজতবাসের পর কারাগার থেকে মুক্ত হলেও ফের হয়রানির আশঙ্কায় তেমন কিছু বলতে চাচ্ছেন না তিনি।

তবে ওই যুবককে সাক্ষীদের সামনে ইয়াবাসহ আটক করার কথা বলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আব্দুল মালেক তালুকদার। তাকে নির্যাতন কিংবা ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক পরিতোষ কুমার কুন্ডু বলেন, এ ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত বছর ২২ সেপ্টেম্বর নগরীর কাউনিয়া বিসিক রোড থেকে মারুফ সিকদার নামে ওই যুবককে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি দল। সেই রাতেই ঘটে এই নির্যাতনের ঘটনা। ইয়াবা উদ্ধারের অভিযোগে ওই রাতেই বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানায় মামলা দায়ের হয়।

ওই মামলায় ১৭ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান মারুফ। দিনমজুর বাবা-মায়ের দুই সন্তানের মধ্যে মারুফ ছোট। মাদক উদ্ধারের ওই মামলায় মারুফের পরিবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাথে আপোসের চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বরিশালের অতিরিক্ত পরিচালক পরিতোষ কুমার কুন্ডু বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, ওই যুবকের নামে তিনটির মতো মামলা আছে। তবে নির্যাতনের একটি ভিডিও দেখা গেছে। নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Exit mobile version