নারী অফিস সহকারীর সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস হওয়ার ঘটনায় শাস্তি হিসেবে জামালপুরের সাবেক ডিসি আহমেদ কবীরের বেতন গ্রেড কমিয়ে দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এছাড়া তিনি আর পদোন্নতি পাবেন না। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ অনুযায়ী এটি কম দণ্ডের শাস্তি। বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ অনুযায়ী গুরুদণ্ড হিসাবে শাস্তির যে বিধান রাখা হয়েছে সেগুলো হলো- নিম্নপদ বা নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিত করা, বাধ্যতামূলক অবসর, চাকরি থেকে অপসারণ, চাকরি থেকে বরখাস্ত করা। আর সবচেয়ে লঘুদণ্ডের শাস্তি হলো- নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিত করা।
বর্তমানে উপসচিব হিসেবে আহমেদ কবীর পঞ্চম গ্রেডে বেতন পান। শাস্তির কারণে তিনি এখন ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী ষষ্ঠ গ্রেডের সর্বনিম্ন ধাপের বেতন পাবেন। পঞ্চম গ্রেডে তার মূল বেতন প্রায় ৭০ হাজার টাকা। এখন তিনি মূল বেতন পাবেন ৩৫ হাজার টাকা। তবে সঙ্গে সংগতিপূর্ণ অন্যান্য ভাতা-সুবিধা পাবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তার পরিবার ও সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ও সার্বিক দিক বিবেচনা করেই এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ আগস্ট রাতে ফেসবুকে আহমেদ কবীরের আপত্তিকর একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। ৪ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে আহমেদ কবীরকে তার কার্যালয়ের এক নারী অফিস সহায়কের সঙ্গে অফিস কক্ষের সংযুক্ত রুমে আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যায়। পরে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ডিসি কবির।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ায় কেলেঙ্কারির মুখে আহমেদ কবীরকে ওএসডি করার কথা ঘোষণা করা হয়। এরপর জামালপুরে নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপসচিব) মোহাম্মদ এনামুল হককে।
সেসময় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রাথমিক তদন্তের প্রেক্ষিতে আহমেদ কবীরেরকে ওএসডি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে আরও তদন্ত করা হবে।
অভিযুক্ত আহমেদ কবীরকে প্রথমে অভিযোগ জানিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। লিখিত কারণ দর্শানোর সঙ্গে তিনি ব্যক্তিগত শুনানি চান। কোনো জবাবেই তার বক্তব্য গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তার বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (বাজেট) মাসুদুল হাসানের প্রথম দফায় করা তদন্তে ভুল থাকায় দ্বিতীয় দফা তদন্তের প্রতিবেদন দিলে সেটি গ্রহণ করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে আহমেদ কবীরকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।