ট্রানজিট নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আলোচনা চলছে বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ২০১৮ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের সুবিধা পায় ভারত। এই দুই সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করার মাধ্যমে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারত পণ্য পাঠাবে তার উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে। তবে এজন্য তারা কোনো ফি দিতে নারাজ।
জানা যায়, প্রথমে জাহাজে করে এনে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে পণ্য খালাস করা হবে। তারপর বাংলাদেশের আটটি সড়ক পথ ব্যবহার করে এসব পণ্য যাবে আসাম ও ত্রিপুরায়। ইতোমধ্যে গত জুলাই মাসে পরীক্ষামূলকভাবে একবার এভাবে ত্রিপুরায় পণ্য পাঠিয়েছে ভারত। তবে পরীক্ষামূলক সেই ট্রানজিটের পর আর কোনো পণ্য বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যায়নি।
বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ প্রতি টন পণ্য পরিবহনে কিলোমিটার প্রতি ২ টাকা করে নির্ধারণ করেছে। এতে করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ফেনী-কুমিল্লা হয়ে আখাউড়া বন্দর পর্যন্ত ২৩০ কিলোমিটার পথ যেতে ১৫ টন পণ্য পরিবহনে ভারতকে গুনতে হবে ৬ হাজার ৫৬০ টাকা। এই হিসেব অনুযায়ী নির্ধারণ হবে সবগুলো রুটের ট্রানজিট ফি। কিন্তু এতেই ভারতের আপত্তি।
এই জটিলতার কারণেই পরীক্ষামূলক পণ্য পরিবহনের পর গত পাঁচ মাস ধরে এটি বন্ধ আছে। ভারতের ভাষ্য, ফি একেবারেই থাকবে না, আর যদি থাকেও তাহলে সেটা হওয়া উচিত খুবই সামান্য। ইতোমধ্যে তারা এই আপত্তির কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলকে।
তারপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন উপদেষ্টা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের দৃষ্টিকোণ থেকে ট্রানজিট ফি’র বিষয়টি আরেকবার বিবেচনা করার জন্য চিঠি দিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগকে (সওজ)। সেই চিঠির উত্তরে সওজ জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তির ৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী ট্রানজিট ফি আদায়ের সুযোগ রয়েছে। আর ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৪ সালের টোল নীতিমালা অনুযায়ী।