যারা দেশ বিরোধী তারাই ইসলাম বিরোধী, যারা ইসলাম বিরোধী তারাই দেশ বিরোধী
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ইসলামের সূচনাকালে সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে যে সকল সঙ্ঘাত এবং দুইটি পক্ষ তৈরি হয়েছিল। সেই সঙ্ঘাত ও পক্ষ তৈরির ক্ষেত্রে আমরা একটি তৃতীয় পক্ষের অনুপ্রবেশ লক্ষ করে থাকি। যাদেরকে ইসলামের ইতিহাসে খারিজী সম্প্রদায় বলে আখ্যায়িত করা হয়। খারিজী হলো যারা অতিমাত্রায় উগ্র। উগ্রপন্থী একটি গোষ্ঠী। তারা সাহাবায়ে কেরামের উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে উভয় পক্ষকে যুদ্ধে এবং সঙ্ঘাতে জড়িয়ে দেওয়ার যাবতীয় কুটকৌশল অবলম্বন করেছিল।
আজকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রকে, প্রশাসনকে এবং আলেম সমাজকে একটি সঙ্ঘাতে জড়িয়ে ফেলার জন্য তৃতীয় একটি উগ্রপন্থী বাংলাদেশ বিরোধী ও ইসলাম বিরোধী একটি চক্র সুখ্য কৌশলে অপতৎপরতা পরিচালনা করছে। দ্যর্থহীনভাবে বলতে চাই। যারা বাংলাদেশ বিরোধী তারাই ইসলাম বিরোধী, যারা ইসলাম বিরোধী তারাই বাংলাদেশ বিরোধী।
তিনি শনিবার (১২ ডিসেম্বর) মুহাম্মদপুরস্থ মারকাজ মসজিদে রাবেতাতুল ওয়ায়েজিন বাংলাদেশের ইসলাহী মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, ভাস্কর্য ইস্যুতে আমার কোনো একটি শব্দ, একটি অক্ষর, বাংলাদেশের সংবিধান, রাষ্ট্র এমনকি প্রশাসনের কোনো আইন এবং শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করেনি। আমার বিরুদ্ধে অপারজয় বাংলার সেখানে দাঁড়িয়ে যারা উস্কানী দিয়েছে। তারাই বাংলাদেশ বিরোধী, তারাই ইসলাম বিরোধী।
তারা চাচ্ছে আজকে বাংলাদেশে যে স্থিতিশীলতা রয়েছে তা ধ্বংস করে এদেশের সরকার এবং প্রশাসনকে আলেম সমাজের বিরুদ্ধে মাঠে নামিয়ে বাংলাদেশকে অনিবার্য সঙ্ঘাতের দিকে ঠেলে দিতে। এ অপশক্তির টার্গেট শুধু আমীরে হেফাজত ও হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে নয় বরং তারা বাংলাদেশের সরকার এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে। মদিনার সনদের কথা বলায় যদি আল্লামা বাবুনগরীকে রাষ্ট্রদ্রোহী সাব্যস্ত করা হয়।এ কথার পরিণতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।
বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে বুঝতে হবে। এদেশে মদিনার সনদের কথা প্রথম আল্লামা বাবুনগরী বলেননি, মদিনার সনদের কথা সর্বপ্রথম প্রধানমন্ত্রীর মসনদে বসে জননেত্রী শেখ হাসিনাই বলেছেন। মদিনার সনদের কথা বলায় যদি বাবুনগরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়। এ অপশক্তি আগামী দিনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও মামলা করবে।
তিনি আরো বলেন, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখেমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমারা দ্যর্থহীন ভাষায় বলেছি, বার বার বলেছি, তিনি বাংলাদেশের একজন মরহুম জাতীয় নেতা, তার প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসার কোনো ঘাটতি নেই। আমরা তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, যারা আমাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেছে তাদের গোড়ার খোঁজ নিলে দেখা যাবে তারা বাংলাদেশ বিরোধী, তারা রাষ্ট্র বিরোধী। তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রস্তুত থাক আগামী দিনে বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের জন্য তোমাদেরকে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। ইনশাআল্লাহ। যারা বাংলাদেশ এবং মদিনার সনদের বিরুদ্ধে কথা বলে বাংলাদেশের ৫৫ হাজার বর্গ মাইলে ১ ইঞ্চি মাটিতেও চলার তাদের কোনো অধিকার নেই।
রাবেতার সভাপতি মাওলানা আব্দুল বাসেত খানের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব আল্লামা হাসান জামিলের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী, মাওলানা মাহফুজুল হক, তেজগাঁও জোনের ডিসি হরুন, মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন প্রমূখ।