মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বৃদ্ধ ও তার পরিবারকে পেটালেন মেয়র

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় মামলা উঠিয়ে নিতে এক বৃদ্ধের পরিবারকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে উপজেলার তিনলাখপীরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫ জন। তারা হলেন- বাছির মিয়া (৬০), তার স্ত্রী জাহানারা বেগম (৪৮), ছোটভাই বাচ্চু মিয়া (৫০), বোন আছিয়া বেগম (৭০) ও মেয়ে জোসনা বেগম (৩০)।  আহতদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাছির মিয়া ও তার স্ত্রীকে  হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বাছির মিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা বলেন, আমাদের মালিকানাধীন ও সরকারিভাবে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেয়া জায়গা থেকে আখাউড়া-আগরতলা রেলওয়ে প্রজেক্টে কসবা পৌরসভার মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল ও উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব শরিফুল হক স্বপনের নেতৃত্বে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে সরবরাহ করে। এর ফলে আমরা ৩ কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হই। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করি।

অভিযোগের অনুলিপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক, র্যা ব-১৪, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবকে দেয়া হয়।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কসবার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে চারটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করে ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। আমরা ক্ষতিপূরণের দাবি করলে তা দিতে অস্বীকার করে।

এ ঘটনায় ২০১৯ সালের নভেম্বরে যুগ্ম-জেলা জজ আদালতে মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েলকে ১নং আসামি করে ৬ জনকে আসামি করে তিন কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইদুল ইসলাম সজিব, সুমন চৌধুরী, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব শরিফুল হক স্বপনসহ আরও দুইজন।

বাছির মিয়ার ভাই বাচ্চু মিয়া বলেন, এ মামলার পরবর্তী হাজিরার তারিখ ২০২১ সালের ৪ জানুয়ারি। এরই মধ্যে পৌরসভা নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় এ মামলা নিয়ে দলীয় মনোনয়ন পেতে বেকায়দায় পড়েছেন মেয়র জুয়েল। শনিবার দুপুরে প্রায় শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে তিনলাখপীর যান মেয়র জুয়েল। এ সময় মামলাটি তুলে নিতে বাছির মিয়াকে চাপপ্রয়োগ করে জুয়েল ও স্বপন।

বাচ্চু মিয়া আরও বলেন, বাছির মামলাটি তুলতে অস্বীকার জানালে তাকে বেদম প্রহার করা হয়। এ সময় আমি, আমার বোন, ভাবি ও ভাতিজি তাকে বাঁচাতে গেলে আমাদেরও পিটিয়ে আহত করে। পরবর্তীতে খবর পেয়ে পুলিশ আসে।

এ বিষয়ে মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল বলেন, অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।

কসবা থানার ওসি লোকমান হোসেন জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনানুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Exit mobile version