দ্বীনে ইসলামকে যারা অপ্রাসঙ্গিক করছে, যারা পবিত্র ধর্মকে অপবিত্র করছে, তাদের প্রতি আবেদন আধ্যাত্মিকতার প্রতি জোর দিন, লৌকিকতার দৌরাত্ম্য বন্ধ করুন। মানুষ বা প্রাণির মুখচ্ছবি, মূর্তি, ভাস্কর্য, ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী উপাসনা স্থলে (মসজিদে বা যেখানে আমরা নামাজ আদায় করি) থাকা, না-জায়েজ। মুসলমানগণ তা কখনো উপাসনা করতে পারেন না। এটি হারাম।
অন্য ধর্মাবলম্বীরা করবেন সেটি তাদের বিষয়। এটি নিয়ে কারোরই কোনো দ্বিমত নেই। এখন বিষয় হলো উপাসনা ব্যতীত সকল মুখচ্ছবি, ছবি, মূর্তি, ভাস্কর্য, যাই হোক না কেন, বর্তমান সমাজে এসব নিষিদ্ধ করতে গেলে, পবিত্র হজ্জেও কেউ যেতে পারবে না। কারণ ছবি তুলতে হবে, পাসপোর্ট বানাতে হবে। এ ধরনের নিষিদ্ধতা দাবিকারীদের মধ্যযুগীয় ধ্যান-ধারণাকে প্রশ্রয় দিলে দ্বীনে ইসলামকেই অপমান করা হবে।
আত্মার পরিশোধন, পবিত্র করণ, অর্থাৎ স্পিরিচুয়ালিটি বাদ দিয়ে শুধুই লৌকিকতা নিয়ে ব্যস্ত গোষ্ঠী আর যাই করুক সমাজনীতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতির নির্দেশনা দিতে পারে না। তাদের কথা শুনলে আমরা শুধু পিছিয়ে যাবো না, আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো। যেমনটা হয়েছে আফগানিস্তান, যেই পথে হাটছে পাকিস্তান। দ্বীনে ইসলাম পরিপূর্ণ জীবন বিধান। নিঃসন্দেহে। এর বিধিবিধান ব্যক্তি মুসলমান তার জীবনে প্রতিপালন করবেন, যার অনুশাসন মেনে চলবেন।
এর একটি নিয়ম হলো একজন মুসলমান, অদৃশ্য সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিনকে কোনো মাধ্যমে বা মুখচ্ছবি বা মূর্তি দ্বারা উপাসনা করবেন না। বাংলাদেশে কোনো মুসলমান কি এই কাজ করছে? ইসলাম পবিত্র ধর্ম, যা ব্যক্তির উপরেই প্রযোজ্য, এই পবিত্র ধর্ম রাষ্ট্র পরিচালনার নির্দেশক নয়, ব্যক্তি জীবনের নির্দেশনা পাই আমরা দ্বীন থেকে।
জীবনবিধিই যদি বলি, রাষ্ট্রের কোনো প্রাকৃতিক জীবন নেই, সুতরাং রাষ্ট্র ধর্ম পালন করে না, পালনের অধিকার সংরক্ষণ করে। ইসলামের কোনো পবিত্র গ্রন্থে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি, বা কোনো বিষয়ে রাষ্ট্রীয় নীতিমালা কি হওয়া উচিত এ ধরনের সুনির্দিষ্ট বিধান নেই। দ্বীন ব্যক্তি জীবনের সহায়ক। ব্যক্তি মুসলমান হয়ে আমি যদি মুখচ্ছবির উপাসনা করি তাহলে অবশ্যই শিরক, কিন্তু উপাসনা কে করছে? কোন মসজিদে ভাস্কর্য আছে, বা মূর্তি আছে? ভাস্কর্য, মূর্তি, মুখচ্ছবি, এগুলোর নিষিদ্ধকরণ এখন শুধুই একটি উসিলা, আসল কথা হলো, অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের অবতাড়না করে দেশে অহেতুক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করা।
পিছিয়ে যাবো না, এগিয়ে যাবো, দ্বীনকে নিয়েই এগিয়ে যাবো, কারও উদ্ভট দাবিকে আমলে নিলে এদেশে জন্ম নিয়ন্ত্রণ হতো না, টিভি, ইন্টারনেট, মোবাইল, প্রযুক্তি, হাসপাতাল, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, নারীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ও সামাজিক অধিকার কিছুই আসতো না। লক্ষ লক্ষ নারী শ্রমিক গার্মেন্টস শিল্পে কাজ না করলে, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামের শিল্পাঞ্চলগুলোর পাশে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাদের ছেলেদের হেফজখানায় না ভর্তি করলে, বেতনের অর্থ থেকে লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে দান না করলে, এই বিশাল লিল্লাহ বোর্ডিং নির্ভর হেফজখানাগুলো, শিল্পাঞ্চলগুলো এখানে তৈরিই হতো না। মহান আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দিন।
সূত্র – মন্ত্রী নওফেলের ফেসবুক থেকে।