তুমি আপাতত চলে যাও,কয়েক দিন পর আইসো।দুই মাস পরে মোটামুটি পরিস্থিতি ঠান্ডা হয়ে যাবে
রোববার রাতে সিলেটের কানাইঘাট সীমান্তের ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের দনা বস্তির খাসিয়ারা তাকে আটক করে
ঘটনার পর এক সিনিয়র কর্মকর্তার নির্দেশে পালিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন সিলেটের রায়হান হত্যা মামলার প্রধান আসামি বরখাস্থ হওয়া এসআই আকবর হোসেন ভুইয়া। সোমবার দুপুরের পর সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকার খাসিয়াদের কাছে আটকের পর তিনি স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি জানান- আমাকে এক সিনিয়র অফিসার বলছিলেন, তুমি আপাতত চলে যাও। কয়েক দিন পর আইসো। দুই মাস পরে মোটামুটি পরিস্থিতি ঠান্ডা হয়ে যাবে। এ কারণে আমি চলে যাই।
গ্রেপ্তারের পর আকবর দাবি করে- রায়হানকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় আটক করা হয়েছিলো। তাকে কাস্টঘর এলাকার লোকজন গণপিঠুনি দেয়। কানাইঘাটের ডোনা সীমান্তের খাসিয়াদের জেরার মুখে কেনো পালিয়েছিলো প্রশ্নের জবাবে সে জানায়- সাসপেন্ড করছে, এরেস্ট করতে পারে। এ কারণে পালিয়েছিলাম।
কোম্পানীগঞ্জ সীমান্তের মাঝের গাওয়ের ওদিকে ভারতে পালিয়েছিলো বলে জানায় আকবর। ওখানে তার এক পরিচিত পরিবার রয়েছে বলে দাবি করে সে।
উল্লেখ্য, গত ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেটের কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে রায়হান নামের এক যুবককে তুলে নিয়ে চাঁদার দাবিতে নির্যাতন করেন ফাঁড়ির সাময়িক বরখাস্ত ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া। পরের দিন সকালে তিনি মারা যান। নির্যাতনের সময় এক পুলিশের মুঠোফোন থেকে রায়হানের পরিবারের কাছে ফোন করে টাকা চাওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা সকালে ফাঁড়ি থেকে পরে হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের লাশ শনাক্ত করেন।
ওই ঘটনার শুরুতে ওই ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা ছিনতাইকারী সন্দেহে নগরের কাস্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হয়েছেন বলে প্রচার চালায়। কিন্তু গণপিটুনির স্থান হিসেবে যেখানকার কথা বলেছিল পুলিশ, সেখানে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের স্থাপন করা ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় এমন কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি। এতে সন্দেহ হয় পুলিশের নির্যাতনের প্রতি। পরদিন পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার।
সেদিনই ফাঁড়ির ইনচার্জ ও উপপরিদর্শক আকবর হোসেন ভুঁইয়া, কনস্টেবল হারুনুর রশীদ, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাশ এবং কনস্টেবল তৌহিদ মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত এবং এএসআই আশেক আলী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজীব হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়।গত ১৯ অক্টোবর ওই ঘটনায় সিলেট আদালতে সাক্ষ্যমূলক জবানবন্দি দেন ফাঁড়ির তিন কনস্টেবল। ২০ অক্টোবর বরখাস্তকৃত কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাশকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। এ মামলায় গত ২৩ অক্টোবর কনস্টেবল হারুনুর রশীদকে গ্রেপ্তার করা হয়।